মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০৬ অপরাহ্ন

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তৎপরতা নেই, আতঙ্কে এলাকাবাসী

অনলাইন ডেক্স রির্পোট
  • আপডেট টাইম: মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তৎপর, তখন দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ায় তেমন কোনো কার্যক্রমের দেখা মিলছে না। এতে এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মীসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও  জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে গুলি করা অবস্থায় অস্ত্রধারীদের ছবি ও ভিডিও প্রকাশিত হয়। তবে এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এ পর্যন্ত কোনো অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এমনকি অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের অনেকেই এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। এতে এলাকায় হতাশা ও ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।পটিয়া চট্টগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা। সাম্প্রতিক সময়ে বহুবার অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকে অস্ত্রের প্রবাহ এই অঞ্চলে বেড়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস বাকি থাকতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো বিশেষ অভিযান চালানো হয়নি।ফলে স্থানীয় বাজার, বস্তি এবং রাজনৈতিক সভায় অস্ত্র বহনের ঘটনা চোখে পড়ছে, যা নির্বাচনী সহিংসতার আশঙ্কা জাগাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পটিয়া উপজেলার একজন ব্যবসায়ী বলেন, সম্প্রতি  প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে, অথচ আজ পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। এখন আবার নির্বাচন সামনে, তাই মানুষ স্বাভাবিকভাবেই ভীত।স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নীরব ভূমিকা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার।চট্টগ্রামের মতো সংবেদনশীল এলাকায় তারা অতিরিক্ত নজর দেবেন।চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, আমরা জেলাজুড়ে  ইন্টেলিজেন্সভিত্তিক অপারেশন ডেভিল হান্ট-২ নামে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের আওতায়  নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই বিশেষ ড্রাইভ চালাচ্ছি জেলাজুড়ে। গত কয়েক দিনে বেশকিছু অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছি, যার মধ্যে রয়েছে পাইপগান ও এলজি। চট্টগ্রাম জেলাজুড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আমাদের টার্গেট লিস্ট রয়েছে। সে হিসেবে বিশেষ টিম দিনরাত সমানতালে কাজ করছে। এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে আমাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে জনসাধারণের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) সংসদীয় আসনের এলডিপি প্রার্থী শিল্পপতি এম এয়াকুব আলী বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না করলে নির্বাচন সহিংসতায় রঙিন হবে। সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে, নয়তো জনগণের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে। পটিয়ার মতো এলাকায় এই অবহেলা গ্রহণযোগ্য নয়। এখন পর্যন্ত পটিয়া থেকে কোনো শীর্ষ সন্ত্রাসী কিংবা অবৈধ অস্ত্রধারীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ, যা আগামী নির্বাচনে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছি।পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক বলেন, গত বছরের ৪ আগস্টের ঘটনার তদন্ত এখনও চলমান। আমরা প্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখছি। নির্বাচনের আগে এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে, যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী  বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। কেউ অপরাধে জড়িত থাকলে দলীয় পরিচয় নির্বিশেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102