বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক প্ল্যান্ট পুনরায় চালু হওয়ার পথে
অনলাইন ডেক্স রির্পোট
-
আপডেট টাইম:
সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাপান ফুকুশিমা দুর্ঘটনার ১৫ বছর পর বিশ্বের বৃহত্তম নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুনরায় চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। সোমবার আঞ্চলিক ভোটের মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় চালু করার চূড়ান্ত অনুমোদনের পথে শেষ ধাপটি সম্পন্ন করেছে জাপান।দেশটির রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কম্পানি (টেপকো) জানিয়েছে, নিয়িগাতার কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রিফেকচারের সমিতির অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।২০১১ সালের ভূমিকম্প ও সুনামির পর ফুকুশিমা দাইইচি প্ল্যান্ট ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশের ৫৪টি রিয়েক্টর বন্ধ করা হয়।কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া, যা টোকিও থেকে প্রায় ২২০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত, পুনরায় চালু হলে জাপানের পারমাণবিক শক্তিতে ফেরার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।ওই ঘটনার পর জাপান আমদানি করা জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যেই দেশটি এখনো চালু করার উপযোগী থাকা ৩৩টি পারমাণবিক চুল্লির মধ্যে ১৪টি আবার চালু করেছে। এর মধ্যে কাশিওয়াজাকি–কারিওয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে প্রথম কেন্দ্র, যা পরিচালনা করবে টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কম্পানি (টেপকো)।এই প্রতিষ্ঠানটি আগে দুর্ঘটনাকবলিত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করত।সোমবার নিগাতা প্রিফেকচারের আইনসভা গভর্নর হিদেয়ো হানাজুমির প্রতি আস্থা ভোট পাস করে। গভর্নর হানাজুমি গত মাসে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় চালুর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিলেন। এই আস্থা ভোটের মধ্য দিয়ে কার্যত কেন্দ্রটি আবার চালু করার অনুমোদন মিলল।তবে গভর্নরের পক্ষে ভোট হলেও, বছরের শেষ এই অধিবেশনে আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র পুনরায় চালু করা নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে গভীর বিভাজন রয়েছে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিদ্যুৎ বিল কমার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও, নিরাপত্তা ও ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগের কারণে অনেকেই এর বিরোধিতা করছেন।অক্টোবরের জরিপে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ স্থানীয় মনে করছেন পুনরায় চালুর শর্ত পূরণ হয়নি এবং প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ টেপকোর প্ল্যান্ট পরিচালনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। টেপকো সাতটি রিয়েক্টরের প্রথমটি জানুয়ারি ২০ থেকে চালু করার পরিকল্পনা করছে। স্থানীয় সমর্থন জেতার জন্য আগামী দশ বছরে ১০০ বিলিয়ন ইয়েন বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।তবুও অনেকেই এখনও সংশয়ী। নিয়িগাতার গভর্নর হিদেয়ো হানাজুমি পুনরায় চালুর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং জাপানের আমদানিকৃত জীবাশ্ম জ্বালানিতে নির্ভরতা কমানোর প্রয়োজন তুলে ধরেছেন। তবে ফুকুশিমা থেকে সরিয়ে আনা শরণার্থী আয়াকো ওগাসহ বিরোধীরা নতুন ঝুঁকির আশঙ্কা নিয়ে সতর্ক করেছেন।প্ল্যান্টটি চালু হলে টোকিও অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যা এআই ডেটা সেন্টারগুলোর চাহিদা এবং জাপানের ডিকার্বনাইজেশন লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে। সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে বিদ্যুতের সরবরাহে পারমাণবিক শক্তির অংশ দ্বিগুণ করে ২০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য রেখেছে।
নিউজটি শেয়ার করুন..
-
-
-
- Print
- উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..