বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৬ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ

অনলাইন ডেক্স রির্পোট
  • আপডেট টাইম: বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নৌঘাঁটি, ইস্টার্ন রিফাইনারি, সারকারখানাসহ কর্ণফুলী নদীর তীরের গুরুত্বপূর্ণ এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মাদরাসাসহ পুরনো স্থাপনাগুলোর সক্ষমতা যাচাই করে ভূমিকম্প সহনীয় মাত্রায় সক্ষমতা উন্নীত করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞগণ।মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরের লালখানবাজারে অবস্থিত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে (আইইবি) আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মানজারে খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম।ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর, ইস্টার্ন রিফাইনারি, সার কারখানাসহ সরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা কর্ণফুলীতীরের বেলে মাটির ওপর স্থাপিত।মাটির গঠন অনুসারে ভূমিকম্পে বেলে মাটি তুষের মতো নড়বড়ে অবস্থায় থাকে। আর এসব স্থাপনা সঙ্গত কারণেই ঝুঁকির মুখে আছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরের প্রায় চারলাখ ভবনের ৭০ শতাংশ নির্মাণ ত্রুটিজনিত ঝুঁকিতে আছে। এসব ভবনের সক্ষমতা যাচাই করে যদি শক্তি বৃদ্ধি করা না হয়, তবে বড় ক্ষতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
কিন্তু তার অদূরে অবস্থিত ঢাকা শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৯৯৩ সালের বিল্ডিং কোড এখন ইনভ্যালিড। আমাদের ২০২০ সালের বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে।সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে জেনারেশন ধ্বংস হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, এই সময়ে আমাদের সন্তানরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকে। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভবন যদি শক্তিশালী না হয় আমাদের সন্তান হারানোর শঙ্কা আছে।
সন্তান হারিয়ে পিতা-মাতা পাগল হয়ে যায়। যেটা ভিয়েতনামে হয়েছিল। সন্তানদের রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে, সোচ্চার হতে হবে। এ ছাড়া একই সময়ে কর্মক্ষম মানুষজন অফিস-আদালতে থাকেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য ভবন নির্মাণ এবং নির্মাণ হওয়া ভবন সুরক্ষিত কি না সেটি নিশ্চিত করতে হবে।ইউরেশিয়ান প্লেট পাশে থাকায় চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলা ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের মাতারবাড়ী সমুদ্র বন্দরকে ঘিরে সেখানে স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে। স্থাপনাগুলো যদি যথাযথভাবে বিল্ডিং কোড মেনে চলা না হয় বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি পর্যটন শহর কক্সবাজারের স্থাপনাগুলোও শক্ত হাতে তদারকি করার তাগাদা দেন দেশের খ্যাতিমান এই প্রকৌশলী।বিশ্বের উন্নত দেশগুলো ভূমিকম্পের আগাম সতর্কবার্তার জন্য যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে, তা দেশে স্থাপনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এবং ভারত-মিয়নমার সীমান্তে তিনটি প্লেট রয়েছে। এ ছাড়া সিলেটের ডাউকি, টাঙ্গাইলের মধুপুরে দুটি প্লেট রয়েছে। এসব প্লেট তদারকিতে প্রযুক্তি ব্যবহার করলে আমরা আগাম সতর্কবার্তা পাব। এতে প্রাণহানির সংখ্যা কমবে।এতে আরো উপস্থিত ছিলেন চুয়েটের সাবেক ভিসি অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন, সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, সিএমএমইজে সভাপতি মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, অ্যাবের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী সেলিম মো. জানে আলম, সিডিএ-চসিকের প্রধান প্রকৌশলীরাসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আইইবির আজীবন সদস্য প্রকৌশলীরা। সেমিনার সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রের সেক্রেটারি প্রকৌশলী খান মো. আমিনুর রহমান।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102