রায় কার্যকর চান কুমিল্লার ৩৯ শহীদ পরিবার
অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট
-
আপডেট টাইম:
বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন কুমিল্লার ৩৯ শহীদ পরিবার।গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর এমন দাবির কথা জানান কুমিল্লার শহীদ আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের স্ত্রী হ্যাপী আক্তার, শহীদ জহিরুল ইসলাম রাসেলের মা মাহমুদা বেগম ও শহীদ রায়হান রাব্বির বাবা ফজর আলী, শহীদ হামিদুর রহমান সাদমানের মা কাজী শারমিন আক্তার ও শহীদ ফয়সালের মা হাজেরা বেগমসহ শহীদদের স্বজনরা।কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার শহীদ আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের স্ত্রী হ্যাপী আক্তার বলেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে যদি ১০০ বারও ফাঁসি দেওয়া হয়, তবু এ অপরাধের ক্ষমা হবে না। হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কাজ করতে যে আদালত তৈরি করেছিলেন, ওই আদালতেই একই অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছে।এটা দেশে নজীরবিহীন রায়। হ্যাপী আক্তার আরো বলেন, আইন ও বিচারের কাঠগড়ায় সবাই সমান। হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার নির্দেশে নির্বিচার গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। আমাদের সন্তান, স্বামী, ভাই-বোন, বাবা যাঁদের হারিয়েছি, তাঁরা কেউ অপরাধী ছিলেন না।তাঁরা আন্দোলনে নিরস্ত্র ও সাধারণ মানুষ ছিলেন। আজকে আমার দুই সন্তান এতিম, আমকে বিধবা করেছে। হাসিনার নির্দেশেই এতগুলো হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর হয়েছে তা দেখেই মরতে চাই।রায় শুনে শহীদ ফয়সালের মা হাজেরা বেগম প্রথমে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলেন। পরে আবেগাপ্লুত হয়ে বলতে থাকেন, ‘বাবা! আমার ছেলেকে কি আমি আর পাব না? তাঁর লাশটা কোথায় আছে তোমরা কেউ জানোনি। কোথায় দাফন করছে জানলে কবরের মাটিগুলো ধরে কাঁদতাম বাবা।’ তিনি বলেন, ‘হাসিনা কেন আমার ছেলেরে মারল? আমার ছেলে তো কোনো দোষ করে নাই। হাসিনার ফাঁসি রায় হইছে, শুনছি।তাকে দেশে ফেরত এনে রায় কার্যকর করা হোক। তাহলে যারা শহীদ হইছে তাঁদের আত্মা শান্তি পাবে।’শহীদ রায়হান রাব্বির বাবা ফজর আলী বলেন, ‘আমার এক ছেলে শহীদ হয়েছে। আমার আরো এক ছেলে আছে, তাঁকেও যদি শহীদ হতে হয়, দিয়ে দেব। কিন্তু হাসিনার ফাঁসি হয়েছে- এটা দেখতে চাই। শুধু রায় হলেই হবে না, আমি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্বাক্ষ্য দিয়ে এসেছি। আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েও আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চেয়েছি। এখন রায় হয়েছে পলাতক খুনি হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফেরত এনে রায় কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।’শহীদ হামিদুর রহমান সাদমানের মা কাজী শারমিন আক্তার বলেন, ‘কুমিল্লায় ৩৯ জন শহীদ পরিবারের সদস্য নিয়ে আমাদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় শোনার পর ওই গ্রুপে সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলেছেন। পাশাপাশি সবাই দাবি জানিয়েছেন, ভারতে পলাতক হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করার।’ তিনি আরো বলেন, ‘শহীদ পরিবারের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এমন রায়। আমরা শহীদ পরিবার মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদিচ্ছা থাকলে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা সম্ভব।’
নিউজটি শেয়ার করুন..
-
-
-
- Print
- উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..