عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي الْوَحْدَةِ مَا أَعْلَمُ مَا سَارَ رَاكِبٌ بِلَيْلٍ وَحْدَهُ
ইবনে ‘উমার (রা.) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যদি লোকেরা একা সফরে কী ক্ষতি আছে তা জানত, যা আমি জানি, তবে কোনো আরোহী রাতে একাকী সফর করত না। (বুখারি, হাদিস: ২৯৯৮)
হাদিসের ব্যাখ্যা
ইবনে উমর (রা.) বর্ণিত এ হাদিসে মহানবী (সা.) রাতে একা ভ্রমণ করা বা নির্জন পথে একা চলাফেরা করার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। হাদিসে বলা হয়েছে—মানুষ যদি সেই সব ক্ষতি, ভয়াবহতা ও ঝুঁকি সম্পর্কে জানত, যা তিনি জানেন, তবে কেউ কখনো রাতে একা যাত্রা করত না।
১. নিজের নিরাপত্তা রক্ষা করা ইসলামের মৌলিক নির্দেশ
ইসলাম জীবনের মূল্য অপরিসীম বলে ঘোষণা করেছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে বিরত থাকা ফরজের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। একা ভ্রমণ করলে ডাকাতি, আক্রমণ, পথ হারিয়ে ফেলা বা দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে।
২. নিঃসঙ্গতার সুযোগে শত্রুরা সহজেই ক্ষতি করতে পারে
একজন একা ভ্রমণকারীকে দেখে অসৎ ব্যক্তি ও দুষ্কৃতকারীদের লোভ জাগ্রত হতে পারে।
৩. মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে দাফন-গোসলের সমস্যা হয়
ইসলাম মৃত ব্যক্তির সম্মান রক্ষা করতে বলে। একা চলার সময় কেউ মারা গেলে তার গোসল, কাফন, জানাজা—কোনো কিছুই সঠিকভাবে সম্পাদিত হওয়ার সুযোগ থাকে না। এ কারণেও একা ভ্রমণ নিরুৎসাহিত।
৪. শয়তানি কুমন্ত্রণা ও ভয়ভীতি বৃদ্ধি পেতে পারে
রাত হলো শয়তানের বিচরণের সময়।
৫. সফরে দলবদ্ধতা বরকতের কারণ
হাদিসে এসেছে, “جماعةً خيرٌ من واحد” —একাধিক ব্যক্তি একার চেয়ে উত্তম।
দলবদ্ধ ভ্রমণ নিরাপত্তা দেয়, মনোবল বাড়ায় এবং একে অপরের সাহায্য পাওয়া যায়। সফরের আদবেও দলগতভাবে চলার তাগিদ বারবার এসেছে।
হাদিসটি মূলত একটি নিরাপত্তাবিধি—জীবন, সম্পদ ও মানসিক শান্তি রক্ষার জন্য। এতে রয়েছে আল্লাহর রাসুলের কৃপাময় সতর্কতা, যাতে মুমিন কোনোরূপ বিপদে না পড়ে। এ শিক্ষা আজকের যুগেও সমানভাবে প্রযোজ্য—নির্জন রাস্তা, রাতের দীর্ঘ ভ্রমণ বা বিপজ্জনক স্থানে একা যাওয়া থেকে বিরত থাকা উত্তম।