শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০৫ অপরাহ্ন

দ. কোরিয়ার জেজু দ্বীপে চায়ের ছদ্মবেশে ভেসে আসছে মাদক

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম: শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫
দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপে সেপ্টেম্বর থেকে সমুদ্রতটে ভেসে আসা রহস্যময় ‘চায়ের প্যাকেট’ আসলে মাদক কেটামিন বলে নিশ্চিত হয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রথমে এগুলোকে সাধারণ চায়ের ব্যাগ মনে করা হয়েছিল। তবে কাছ থেকে পরীক্ষা করে দেখা যায়, ফয়েলে মোড়ানো এবং চীনা ‘চা’ অক্ষর লেখা এসব প্যাকেটের ভেতরে রয়েছে কেটামিন।পুলিশ জানায়, গত দুই মাসে অন্তত আটটি ঘটনায় মোট প্রায় ২৮ কেজি (৬২ পাউন্ড) কেটামিন উদ্ধার করা হয়েছে।কেটামিন চিকিৎসায় অ্যানাস্থেটিক হিসেবে ব্যবহার করা হলেও দক্ষিণ কোরিয়ায় এর বিনোদনমূলক ব্যবহার অবৈধ। কেটামিন অতিরিক্ত গ্রহণে হৃদযন্ত্র, ফুসফুসসহ শারীরিক ও মানসিক মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।জেজু কোস্ট গার্ড সম্ভাব্য সমুদ্র ও স্থলপথ খুঁজে বের করতে বিশেষ তদন্ত দল গঠন করেছে। তারা দ্বীপের বিভিন্ন উপকূলে তল্লাশি চালাচ্ছে।একই সঙ্গে বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে যেন সমুদ্রতটে পাওয়া সন্দেহজনক কোনো বস্তু স্পর্শ বা খোলার চেষ্টা না করে বরং তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানোনোর কথা বলা হয়েছে।হানসুং বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদক ও অ্যালকোহল আসক্তি বিভাগের অধ্যাপক ইউন হিউং-হি মনে করেন, এসব কেটামিন প্যাকেটের পেছনে বড় কোনো আন্তর্জাতিক চক্র থাকতে পারে।তিনি জানান, কিছু চক্র ‘সি বাম্প’ নামে পরিচিত এক পদ্ধতিতে মাদক পরিবহন করে—এতে ট্র্যাকারযুক্ত মাদকের প্যাকেট সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়, পরে তা নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে তুলে নেওয়া হয়। অধ্যাপক ইউন আরো বলেন, বিমানবন্দর ও বন্দর এলাকায় অপেক্ষাকৃত শিথিল তদারকির সুযোগ নিয়ে অপরাধীরা জেজুকে ব্যবহার করে দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে মাদক পাচারের চেষ্টা করে থাকতে পারে।১৫ অক্টোবর সগুইপো উপকূলে এক পরিষ্কারক কর্মী একাই প্রায় ২০ কেজি ‘চায়ের প্যাকেটের মতো দেখতে মাদক’ খুঁজে পান। এটি এ পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া সবচেয়ে বড় চালান। এই সপ্তাহের শুরুতে জেজু সিটির উত্তর উপকূলজুড়ে সৈকত তল্লাশিতে ৮০০-এর বেশি সেনা, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেয় বলে জানিয়েছে কোরিয়া জুংআং ডেইলি।তদন্তকারীরা এখন ধারণা করছেন, সমুদ্রস্রোতের টানে এসব মাদক জেজুতে ভেসে এসেছে। কোস্ট গার্ডের মাদকবিরোধী ইউনিটের প্রধান জানিয়েছেন, অনুরূপ ‘চা প্যাকেট’ মাদক দক্ষিণ কোরিয়ারই আরেক শহর পোহাং ও জাপানের তসুশিমা দ্বীপেও পাওয়া গেছে।জেজুর বাসিন্দারা অবৈধ মাদক উপকূলে ভেসে আসায় ব্যাপকভাবে উদ্বিগ্ন। জেজু সিটির এক বাসিন্দা কিম বলেন, ‘এতো মানুষকে মাদক খুঁজতে দেখে ভয় লাগে (তিনি মাদক তল্লাশির পুলো অভিযান প্রত্যক্ষ করেছেন)। ভাবলেই কাঁপছি—যদি কোনো শিশু এগুলো স্পর্শ করে ফেলে!’ আরেক বাসিন্দা হিওন বলেন, ‘সবচেয়ে জরুরি হলো, আর যেন কোনো মাদক ভেসে না আসে, সে ব্যবস্থা করা।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102