সপ্তাহে মাত্র ১ দিন অফিসে আসার অভিযোগ সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে
অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট
-
আপডেট টাইম:
বুধবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৫
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার দীপা রানী নন্দী প্রায় দুই বছর ধরে সপ্তাহে মাত্র একদিন অফিস করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, তিনি প্রতি বৃহস্পতিবার ঢাকার বাসা থেকে এসে ওই একদিনেই সারা সপ্তাহের দলিল-সম্পর্কিত সব কাজ সম্পন্ন করে আবার ঢাকায় ফিরে যান। ফলে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে কৃষক, শ্রমিক ও নিম্নআয়ের পরিবারগুলো জমির দলিল রেজিস্ট্রির জন্য চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।গতকাল মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সপ্তাহে মাত্র একদিন দলিল সম্পাদনের এই রুটিন দীর্ঘদিন ধরে চালু রয়েছে।এতে জমি ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। জমাকৃত দলিল একদিনে সম্পাদনের ভিড়ে ভুলত্রুটির ঝুঁকিও বাড়ছে।অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরা জানান, তারা নিয়মিত সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিস করেন। কিন্তু সাব-রেজিস্ট্রার দীপা রানী নন্দী শুধুমাত্র প্রতি বৃহস্পতিবার ঢাকায় থেকে এসে অফিস করেন।ফলে সপ্তাহের অন্যদিন দলিল সম্পাদন করা সম্ভব হয় না।ভুক্তভোগী হাসেম মৃধা (৬০) অভিযোগ করে বলেন, ‘৫ শতাংশ জমি কিনতে মহুরীদের কাছে কাগজপত্র দিয়ে সাতদিন অপেক্ষা করতে হয়। সাব-রেজিস্ট্রার বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এসে বিকাল ৪টার মধ্যে সব দলিল শেষ করেন। এতে ভিড়ে তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে গিয়ে ভুল হয়।সাব-রেজিস্ট্রার চলে গেলে আর দলিল হবে না এই অজুহাতে আমাদের মত মূর্খদের কাছ থেকে মোটা অংশ হাতিয়ে নেওয়া হয়।’আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষক মনির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘২০২২ সালে আমার প্রতিবেশী ভুয়া জন্মসনদ বানিয়ে ভারতের এক নাগরিককে দাতা বানিয়ে আমার বসতভিটার দলিল তৈরি করেন। সাব-রেজিস্ট্রার যদি সময় নিয়ে যাচাই করতেন, তাহলে আমাকে এই বিপদে পড়তে হতো না। একদিনে কাজ শেষ করার তাড়াহুড়োয় আমার সর্বনাশ হয়েছে।’অফিসের পেশকার গৌতম সাহা বলেন, ‘চরভদ্রাসনে সপ্তাহে মাত্র ৩০টি দলিল সম্পাদন হয়।তাই সাব-রেজিস্ট্রার সপ্তাহে একদিন আসেন। যদি ২০০ দলিল হতো, তাহলে তিনি প্রতিদিনই অফিস করতেন।’উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুন বলেন, ‘সপ্তাহে একদিন অফিস করার কোনো সরকারি বিধান নেই। প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিস করতে হয়। সাব-রেজিস্ট্রার যাতে নিয়মিত অফিস করেন এই বিষয়ে আমি দ্রুত আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবো।’সাব-রেজিস্ট্রার দীপা রানী নন্দী মুঠোফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি ডিআর স্যারকে অবহিত করেই অফিসিয়াল কাজ করছি। বর্তমানে শারীরিক কারণে আমার অফিসে কম যাওয়া হয়।’
নিউজটি শেয়ার করুন..
-
-
-
- Print
- উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..