রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকায় “হোয়াট মেকস অ্যান এন্ট্রাপ্রেনার?” শীর্ষক এক অনুপ্রেরণামূলক সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা উদ্যোক্তা সত্তা, উদ্ভাবন ও নেতৃত্বের মূল ধারণা নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন।
সেশনের মূল বক্তা ভারতের মাঙ্গায়লাম ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক তাকরার আহমদ ইয়াত্তু তাঁর প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। উদ্যোক্তা উন্নয়নের চারটি স্তম্ভ — উদ্ভাবন, মূল্য সৃষ্টি, ঝুঁকি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন — নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন তিনি।
উদ্ভাবন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নতুন কিছু করা বা পুরনোকে আরও ভালোভাবে করা — সেটাই সত্যিকারের উদ্ভাবন।” উদাহরণ হিসেবে তিনি ইলন মাস্কের টেসলা ও স্পেসএক্স-এর কথা উল্লেখ করেন।
মূল্য সৃষ্টি বিষয়ে তিনি আয়মান সাদিকের ১০ মিনিট স্কুল-এর উদাহরণ দেন। অনলাইন শিক্ষাকে সহজলভ্য করে তিনি দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলেছেন বলে বক্তা মন্তব্য করেন।
ঝুঁকি গ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি ফাহিম সালেহের পাঠাও-এর সাফল্য তুলে ধরেন। স্থানীয় প্রেক্ষাপটে রাইড-শেয়ারিং সেবাকে সফলভাবে রূপ দিয়েছিলেন তিনি।
বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে ভারতের কে আর মাঙ্গায়লাম ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক তাকরার আহমদ ইয়াত্তু বলেন, “ধারণা তখনই মূল্যবান, যখন তা বাস্তবে রূপ পায়। উদ্যোক্তারা সফল হন তাঁদের কার্যকর সিদ্ধান্ত ও সাহসী পদক্ষেপের জন্য।”
তিনি আরও বলেন, অনেক অনুকরণধর্মী উদ্যোক্তা বিদেশি মডেল স্থানীয়ভাবে রূপান্তর করে সফল হয়েছেন। যেমন আলিবাবা, ফ্লিপকার্ট ও ওয়াইও রুমস স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সেশনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল উৎসাহব্যঞ্জক। প্রশ্নোত্তর পর্বে তাঁরা নিজস্ব ধারণা ও উদ্যোক্তা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
সেশনচেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এন. এম. মেশকাত উদ্দীন। তিনি অতিথি বক্তাকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন। বক্তব্যে তিনি বলেন,“উদ্যোক্তা হওয়া মানে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা। তরুণদের উচিত সৃজনশীলতা, নৈতিকতা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়া।”
সেশনটি পরিচালনা করেন ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও রেজিস্ট্রার ইনচার্জ মো. মসিউর রহমান; সহযোগী অধ্যাপক মুরাদ হাসান, বিভাগীয় প্রধান (বিবিএ); সহকারী অধ্যাপক শারমিন সুলতানা, বিভাগীয় প্রধান (সিএসই); সহকারী অধ্যাপক আমিনুল আশরাফ, বিভাগীয় প্রধান (এইচএমটি); সহকারী অধ্যাপক আমেনা খাতুন; কো-অর্ডিনেটর লাবণী বিশ্বাস; প্রভাষক শামিমা সিদ্দিকা, আবরার আহমেদ খান, স্বপন মিয়া, সাকিব হাসান ও মিতানুর রহমান; সহকারী কন্ট্রোলার আব্দুর রহমান; অডিট অফিসার সুরিদ জামান; এবং আইটি ম্যানেজার মো. শামসুল ইসলাম।
এক ঘণ্টার এই সেশনটি অনুপ্রেরণা ও আশার বার্তা দিয়ে শেষ হয়। শিক্ষার্থীরা এমন একটি ফলপ্রসূ অনুষ্ঠানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তা যাত্রায় নতুন করে অনুপ্রাণিত হন।