দখলদারিত্বের অবসানের পর অবশেষে সংস্কার করা হচ্ছে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টর খেলার মাঠটি। সংস্কারের আওতায় চলছে মাঠের উঁচুনিচু স্থান সমতল, ফুটবল খেলার বার নির্মাণ, ক্রিকেট পিচ তৈরি, বসার বেঞ্চ মেরামত, বাউন্ডারি ওয়াল সংস্কার, মাটি ফেলে মাঠে প্রাকৃতিক ঘাস তৈরির উদ্যোগসহ সার্বিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। এতে খেলার মাঠটিতে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফেরার আশা করছেন সেক্টরের সচেতন বাসিন্দারা।

উত্তরা ১৪ নং সেক্টর মাঠ
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে দখলদারিত্ব আর সংস্কারের অভাবে সেক্টরবাসীর জন্য নির্ধারিত ওই খেলার মাঠটি মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। তবে ৫ আগস্ট পরবর্তী স্থানীয়দের উদ্যোগে মাঠের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ওয়াকওয়েতে লাইট স্থাপন, নিয়মিত ঝাড়ু দেওয়া থেকে শুরু করে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে মাঠটিকে বর্তমানে শিশুদের খেলার উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে। মাঠে সার্বিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নিজেদের উদ্যোগে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয়রা।সরেজমিন দেখা যায়, মাঠের জায়গায় জায়গায় বালু বেরিয়ে আসায় সবুজ ঘাস ফিরিয়ে আনতে মাঠে ফেলা হচ্ছে ভেজা মাটি। সেই সঙ্গে শিশুদের খেলার জন্য মাঠের মাঝ বরাবর তৈরি করা হচ্ছে একাধিক ক্রিকেট পিচও। এছাড়াও মাঠজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দীর্ঘদিনের ইট-পাথরের কণাও সরিয়ে একত্রে জড়ো করা হয়েছে একপাশে।
সংস্কার কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা স্থানীয় যুবক তানভীর রহমান নির্ঝর বলেন, কল্যাণ সমিতির সহযোগিতায় আমরা মাঠের পূর্ব পাশের গেটটা করেছি। মাঠের ভেতরের তিনটা ক্রিকেট খেলার পিচ তৈরি করা হচ্ছে। লাল মাটি ফেলে জায়গাগুলো সমান করা হচ্ছে যাতে কেউ পড়ে না যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান বলেন, সেক্টরের বাসিন্দারা ছেলেমেয়েদের মাঠে খেলাধুলা করতে পাঠাতে চায়। কিন্তু, উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় সন্তানদের মাঠে পাঠানো যাচ্ছিল না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেক্টরের অপর এক বাসিন্দা বলেন, ৫ আগস্টের আগে প্রায়ই মাঠের মধ্যে বিভিন্ন দোকানপাট বসানো হতো। মাঠের পূর্বপাশের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরেই মেলার জিনিসপত্র জড়ো করে রাখা হয়েছিল। সে সময়কার রাজনৈতিক নেতাদের প্রশ্রয়ে মাঠের জায়গার অপব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু, এখন যেহেতু সংস্কার হচ্ছে তাই আমরা চাই মাঠের মধ্যে যেন কোনো ধরনের অবৈধ স্থাপনা বসিয়ে মাঠের জায়গা দখল না করা হয়।
জানা যায়, রাজউক কিংবা সিটি কর্পোরেশন থেকে দীর্ঘদিনেও মাঠ সংস্কারে উদ্যোগ না নেওয়ায় নিজেদের অর্থায়নেই মাঠ সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছেন উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দারা।
সূত্র জানায়, মাঠের আশপাশে কয়েকটি বস্তি থাকায় এসব বস্তি থেকে মাদক বিক্রি পরিচালনা করা হয়। আগে সন্ধ্যার পর মাঠের মধ্যেই গাঁজার আসর বসত। এখন লাইট বসানোর পর কিছুটা কমেছে।
এ বিষয়ে জানতে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রহিম মোল্লার ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, মাঠে আমরা নতুন করে ভিটিবালি ফেলছি, ঘাস জন্মানোর জন্য। সংস্কার কাজ চলায় মাঠে খেলাধুলা কয়েকদিন বন্ধ রেখেছিলাম। এখানে সেক্টর থেকে শুরু করে আশপাশের বাচ্চারা সবাই খেলাধুলা করতে আসে। মাঠের ওয়াকওয়েতে ভোরবেলা ও বিকালে মানুষজন হাটে।
ডিএনসিসি আঞ্চলিক-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম বদরুদ্দোজা বলেন, এগুলো রাজউকের মাঠ। উন্নয়নের জন্য রাজউক আমাদেরকে মাঠগুলো হস্তান্তর করেনি। সেক্টর সোসাইটি ১৪ নম্বর সেক্টরের মাঠ দেখভাল করে।