ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগে রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মৌশাইট শাখার এক শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জানিয়ে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর ২০২৫) বিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লিখিত প্রাতিষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ৮ অক্টোবর ২০২৫ ইং তারিখে প্রতিষ্ঠানের অষ্টম শ্রেণির ড্যাফোডিল শাখায় ক্লাস চলাকালে শিক্ষক অভিজিৎ বিশ্বাস ইসলাম ধর্ম নিয়ে অনুপযুক্ত ও আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ঘটনাটি প্রশাসনের নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় এবং প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ প্রফেসর এম. এ. মান্নান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে—
“শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা আমাদের অঙ্গীকার। কোনোভাবেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন আচরণ বা বক্তব্য প্রতিষ্ঠান বরদাস্ত করবে না। সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে, তাকে আর কখনোই কলেজে শিক্ষকতার সুযোগ দেওয়া হবে না এবং বিষয়টি আইনগতভাবেও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে শিক্ষকদের জন্য কঠোর নৈতিক ও পেশাগত আচরণবিধি জারি করা হবে। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ধর্মীয় সহনশীলতা, মানবিক মূল্যবোধ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তুলতে আগামী সপ্তাহে এক বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করবে প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়া, বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নীতিমালা পুনর্বিবেচনার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন এবং ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধভিত্তিক শিক্ষার প্রতি শিক্ষকদের সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রফেসর এম. এ. মান্নান বলেন,
“আমরা ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী যদি ইসলামী মূল্যবোধ বা কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কিছু বলেন, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনাটি প্রকাশের পর স্থানীয় অভিভাবক সমাজও বিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্ম অবমাননার মতো ঘটনা পুনরায় ঘটবে না।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তারা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে এবং প্রমাণিত অপরাধের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।