টাইফয়েড জ্বর (Typhoid Fever) একটি প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার জন মৃত্যুবরণ করে।
আশঙ্কাজনক তথ্য হচ্ছে- আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণকারীদের অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়া এবং সাব-সাহারান আফ্রিকায় বসবাসকারী মানুষ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বের উন্নত দেশসমূহে এই রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে কম হলেও বাংলাদেশ-সহ অনেক উন্নয়নশীল দেশে অন্যতম জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে।
তথ্য বলছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্তের হার বাংলাদেশে অনেক বেশি। The Global Burden of Disease-এর সমীক্ষা অনুযায়ী ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৪,৭৮,০০০ জন টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং ৮,০০০ জন মৃত্যুবরণ করে: যার মধ্যে ৬৮ শতাংশই শিশু।
টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধ, সংংক্রমণ হ্রাস, জ্বরের কারণে সৃষ্ট জটিলতা ও মৃত্যুঝুঁকি হ্রাস করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার বিনামূল্যে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের টাইফয়েড কনজ্যুগেট ভ্যাকসিন (মনোভেলেন্ট) টিভিসি প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি জানান, ১২ তারিখ থেকে শুরু হয়ে আগামী চার সপ্তাহব্যাপী (১৮ কর্ম দিবস) প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীরা সারাদেশে শিশুদের টিকা প্রদান করবেন। ক্যাম্পেইনের আওতায় অনলাইনে জন্মসনদ নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নির্ধারিত বয়সের শিশুরা বিনামূল্যে টিকা গ্রহণ করবে পারবেন।
টিকা পেতে যা করবেন:
টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উদ্দিষ্ট সকল শিক্ষার্থী এবং শিশুদের https://vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে জন্ম নিবন্ধন সনদের ১৭ সংখ্যা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন। পরবর্তীতে ঐ একই ওয়েবসাইট থেকে টাইফয়েড টিকাদান কার্ড ডাউনলোড করে টিকাদানের দিন নিয়ে আসুন।
১২ অক্টোবর (রবিবার) থেকে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) আওতায় সারাদেশে শুরু হতে যাচ্ছে টাইফয়েড ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন-২০২৫। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের এই টিকা প্রদান করা হবে। সারাদেশের পাশাপাশি ঢাকায় প্রায় ১০ লাখ ৩৪ হাজার শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েডের টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।
উল্লেখ্য, টিকার প্রাপ্যতা অনুযায়ী যাদের ১৭সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নেই অথবা যে সকল শিক্ষার্থী ৮ম/৯ম শ্রেণিতে পড়ে কিন্তু বয়স ১৫ বছরের বেশি তাদের রেজিস্ট্রেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার স্বাস্থ্য সহকারী/টিকাদানকর্মীর সাথে যোগাযোগ করুন।