আজ ৫ অক্টোবর, বিশ্ব শিক্ষক দিবস। শিক্ষককে ‘জাতি গঠনের কারিগর’ বলা হলেও দেশের বাস্তব চিত্র ভিন্ন— এমন মন্তব্য করেছেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম।
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “অনেক শিক্ষক এখনো সংসারের দুশ্চিন্তা নিয়ে ক্লাসে দাঁড়ান। ফলে শিক্ষার্থীর প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারেন না। যদি শিক্ষক ক্লাসে দাঁড়িয়েও সংসারের চালের হিসাব করেন, তাহলে শিক্ষা কার্যক্রম কখনোই ফলপ্রসূ হবে না।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “শিক্ষকের মর্যাদা ও সুবিধা নিশ্চিত না করলে যোগ্য মানুষ শিক্ষকতায় আসবেন না। আর তখন জাতির অগ্রগতি থমকে যাবে।”
ড. শামছুল আলম বলেন, “আমি একজন শিক্ষক হিসেবে গর্বিত, কারণ মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন— আমাকে শিক্ষক হিসেবে পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত শিক্ষক সেই, যার কাছ থেকে সারাজীবন শেখা যায়।”
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের দেশে শিক্ষকের বাস্তব মর্যাদা নেই বললেই চলে। আর্থিক সুবিধাও খুব সীমিত। শিক্ষকরা পেটে-ভাতে জীবন চালান, তাই মেধাবীরা আর এই পেশায় আসতে চান না।”
উপাচার্যের মতে, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড হলেও তা কার্যকর হয় শিক্ষকের হাত ধরেই। একজন আদর্শ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কেবল জ্ঞান দেন না, বরং চরিত্রবান মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন।
বেসরকারি মাদ্রাসা ও ইসলামি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “শিক্ষকতা শুধু পেশা নয়, এটি আত্মিক দায়িত্ব। তাই রাষ্ট্রকে শিক্ষকদের মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।”
সবশেষে উপাচার্য আহ্বান জানান—
“শিক্ষকের বড় বাড়ি বা গাড়ি না থাকলেও শিক্ষার্থীর সম্মানই সবচেয়ে বড় সম্পদ। চলুন আমরা জাতির ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের উজাড় করে দিই; তাহলেই প্রকৃত অর্থে শিক্ষকের জয় নিশ্চিত হবে।”