শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৬ অপরাহ্ন

উল্লাপাড়ায় গোহালা নদীর আড়াই কিমি ইজারা দিল মসজিদ কমিটি

অনলাইন ডেক্স রির্পোট
  • আপডেট টাইম: শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৫
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় মধ্যদিয়ে বহমান গোহালা নদীর আড়াই কিলোমিটার এলাকা ইজারা দিয়েছে স্থানীয় একটি মসজিদ কমিটি। এতে করে এলাকার শতাধিক মৎস্যজীবীর জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়ার আশংকা করা হচ্ছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার উধুনিয়া বাজারে প্রকাশ্য ডাকে এই নদী ইজারা দেওয়া হয়। উধুনিয়া গ্রামের ইউসুফ আলী মোল্লা সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬২ হাজার টাকায় নদীটির আড়াই কিলোমিটার এলাকা ইজারা পান।এর আগে উধুনিয়া বাজার জামে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং করে দরপত্রে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। মসজিদ কমিটির নিয়ম অনুযায়ী বাংলা আশ্বিন মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত ইজারাদার ব্যতীত কেউ ওই নদীতে মাছ ধরতে পারবে না বলে সেখানে ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে অন্য কেউ মাছ ধরতে চাইলে ইজারাদারকে টাকা দিতে হবে।ফলে এ অঞ্চলের অন্তত শতাধিক ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী নদীতে মাছ ধরার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।গোহালা নদীটির দৈর্ঘ্য ২৮ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৯৩ মিটার। এটি একটি স্থানীয় নদী। যা জনজীবন ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ। স্থানীয় মৎস্যজীবিরা এ নদীতে সারা বছর মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।উধুনিয়া গ্রামের প্রবীণ মৎস্যজীবী আব্দুল মান্নান ফকির বলেন, ‘গত ৪০ বছর ধরে এই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। আগে কোনোদিন নদীতে ইজারা পদ্ধতি ছিল না। এবার নদী ইজারা দেওয়ায় অন্তত ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ইজারাদারকে দিতে হবে। নইলে নদীতে জাল নামাতে দেবে না।’স্থানীয় মৎস্যজীবী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘১৫ বছর ধরে গোহালা নদীতে মাছ ধরছি।আগে নদীতে মাছ ধরতে কারো অনুমতি লাগত না। মসজিদ কমিটি এ বছর নদী ইজারা দেওয়ায় মাছ ধরতে হলে টাকা দিতে হবে। এই এলাকায় শতাধিক পেশাদার ও অপেশাদার মৎস্যজীবী রয়েছে। ইজারার কারণে সবাইকে বাড়তি টাকা গুনতে হবে। নদী ইজারা দেওয়া যায় এবারই প্রথম দেখছি।’ইজারাদার ইউসুফ আলী মোল্লা বলেন, ‘সর্বোচ্চ দর ১ লাখ ৬২ হাজার টাকায় আড়াই কিলোমিটার গোহালা নদীর ইজারা পেয়েছি। মসজিদ কমিটি মাধ্যমে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে এই ইজারা পেয়েছি।’উধুনিয়া জামে মসজিদের সহসভাপতি আব্দুল হামিদ বলেন, ‘মসজিদ উন্নয়নের তহবিল সংগ্রহের জন্য এই ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারার ব্যতিত অন্য কেউ চাইলেই নির্ধারিত আড়াই কিলোমিটারের মধ্যে মাছ ধরতে পারবে না।’উল্লাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, ‘নদীতে মাছ ধরার জন্য কোনো মসজিদ কমিটির ইজারা দেওয়ার এখতিয়ার নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত সাংবাদিকদের বলেন, ‘নদী সরকারি সম্পদ। কোনো ব্যক্তি বা কমিটি নদী ইজারা দিতে পারে না। এমন কাজে কেউ জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নদী ইজারা দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। বিষয়টি দেখছি।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102