ভূমধ্যসাগরের লিবিয়া উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি নৌকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও ডুবে যাওয়ার ঘটনায় অন্তত ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাণে বেঁচে গেছেন মাত্র ১৩ জন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা ও আনাদোলু এজেন্সি।
আইওএমের তথ্য অনুযায়ী, নৌকাটি রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সুদান থেকে যাত্রা শুরু করে। এতে মোট ৭৪ জন সুদানি শরণার্থী ছিলেন। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) লিবিয়া উপকূলের কাছে নৌকাটিতে আগুন লাগে এবং সেটি ডুবে যায়। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইউএনএইচসিআর জানায়, দুর্ঘটনার পর মাত্র ১৩ জন জীবিত উদ্ধার হয়েছেন, বাকিরা নিহত বা নিখোঁজ। নিহতদের সবার পরিচয় সুদানি নাগরিক হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে সুদানি নাগরিকরা জীবন বাঁচাতে বিপজ্জনক পথে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন। সংস্থাটি জানিয়েছে, “গৃহযুদ্ধ বন্ধ হলেই প্রকৃত সমাধান মিলবে। তাহলেই সুদানি শরণার্থীরা নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবে এবং এমন প্রাণঘাতী যাত্রার ঝুঁকি নেওয়া থেকে বিরত থাকবে।”
সুদানে ২০২৩ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। তখন থেকেই হাজার হাজার মানুষ দেশ ছেড়ে লিবিয়াসহ পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রে আশ্রয় নিচ্ছেন।
এর একদিন আগে, মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) একই পথে আরেকটি নৌকায় আগুন লাগার ঘটনায় অন্তত ৫০ জন সুদানি শরণার্থী প্রাণ হারান এবং ২৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
আইওএমের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ভূমধ্যসাগরে ইউরোপগামী অন্তত ২ হাজার ৪৫২ জন অভিবাসী বা শরণার্থী মারা গেছেন কিংবা নিখোঁজ হয়েছেন। আফ্রিকা ও এশিয়ার বহু মানুষ ইউরোপমুখী যাত্রার জন্য লিবিয়া উপকূলকে রুট হিসেবে ব্যবহার করেন, যদিও এটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পথগুলোর একটি।