মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:০৪ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:

৫ চিকিৎসক দিয়ে চলছে বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

অনলাইন ডেক্স রির্পোট
  • আপডেট টাইম: মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও জনবলের সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে ২৮টি সরকারি চিকিৎসক পদের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৫ জন। শূন্য রয়েছে বাকি ২৩টি পদ। কর্মরত চিকিৎসকদের দীর্ঘ অনুপস্থিতি নিয়েও রয়েছে অভিযোগ।এদিকে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ঘাটতিতে জুনিয়র কনসালটেন্টের ১০টি পদের একটিতেও কোনো চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালটি কার্যত একটি নামমাত্র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এতে উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ নূন্যতম চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।হাসপাতালের নথি অনুযায়ী, একজন মেডিক্যাল অফিসার ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে এবং একজন প্যাথোলজিস্ট চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অনুপস্থিত। গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা সত্ত্বেও তাদের দীর্ঘ অনুপস্থিতি নিয়ে কোনো কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।প্যাথোলজিস্ট না থাকায় হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা প্রায় বন্ধ। ফলে সাধারণ মানুষদের বাধ্য হয়ে বাইরের বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে কয়েকগুণ বেশি খরচ করে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে জরুরি সেবাও অনুপস্থিত। মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি ও শিশুসহ ১০টি বিশেষজ্ঞ পদ শূন্য।সার্জন না থাকায় বড় কোনো অস্ত্রোপচারও সম্ভব নয়। ফলে প্রসূতি মা ও দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।চিকিৎসকের ঘাটতি ছাড়াও নার্স, মিডওয়াইফ ও অন্যান্য কর্মচারীর অর্ধেকের বেশি পদ শূন্য থাকায় হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম স্থবির। পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাবে ওয়ার্ড ও শৌচাগারের অবস্থাও শোচনীয়। নোংরা ও দুর্গন্ধময় পরিবেশে রোগীদের ভোগান্তি আরো বেড়েছে।শয্যা সীমিত হওয়ার কারণে অনেক রোগী মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছেন।সর্দি-জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসা আব্দুল জব্বার বলেন, ‘বাবাকে নিয়ে সকাল ৯টায় এসেছি, দুপুর ১২টা বাজে। এখনো ডাক্তারের দেখা পাইনি। শুনলাম আজ একজন মাত্র ডাক্তার। সামান্য পরীক্ষার জন্যও বাইরে যেতে হয়। এখানে শুধু বিল্ডিং আছে, সেবার কিছু নেই।’হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোবাশ্বির আহমেদ বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে একজনকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে, যা অমানবিক ও ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে হৃদরোগ বা ডেঙ্গুর মতো জটিল রোগের প্রাথমিক চিকিৎসাও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ৫০ শয্যার অনুমোদন থাকলেও নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ থাকায় মাত্র ২৭টি শয্যা ব্যবহার করা যাচ্ছে। যার ফলে রোগীদের প্রায়ই মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দিতে হয়।’উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়্যিদ আমারুল ইসলাম সরাসরি মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল সিকদার বলেন, ‘জনবল সংকটের বিষয়টি আমরা জানি। শূন্য পদে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। সীমিত জনবল নিয়েও রোগীরা যেন সর্বোচ্চ সেবা পায়, সে বিষয় আমরা নজর রাখছি এবং এই সংকট দ্রুত সমাধানের আশাবাদী।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102