বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এসআইবিএল), ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক—একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, একীভূতকরণের অংশ হিসেবে উদ্যোক্তাদের সব শেয়ার কোনো ক্ষতিপূরণ ছাড়াই বাজেয়াপ্ত করা হবে। কারণ এসব ব্যাংকের নিট সম্পদ এখন নেগেটিভ। তবে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।
নতুন ব্যাংক হবে শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন, যার পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা আসবে সরকার থেকে, ১২ হাজার কোটি টাকা আমানত বিমা তহবিল থেকে এবং বাকি ৩ হাজার কোটি টাকা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে।
নতুন ব্যাংকের জন্য গঠন করা হবে অভিজ্ঞ ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ ও সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ। নিয়োগ দেওয়া হবে একজন নতুন সিইও। বর্তমান পাঁচ ব্যাংকের এমডিদের কেউ এ পদে থাকতে পারবেন না। তবে নিম্ন পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা ছাঁটাই হবেন না।
পাঁচ ব্যাংকের সব সম্পদ, দায়দেনা ও শাখা নতুন ব্যাংকের নামে স্থানান্তরিত হবে। বর্তমানে ৭৬০টি শাখা ও ৬৯৮টি উপশাখার মধ্যে প্রয়োজন অনুসারে শাখা সমন্বয় ও পুনর্বিন্যাস করা হবে।
আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে পর্যায়ক্রমে। প্রয়োজনে সাময়িকভাবে উত্তোলনে সীমাবদ্ধতা আরোপ হতে পারে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের অর্থের বিপরীতে নতুন ব্যাংকের শেয়ার দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
গত বছরের আগস্টে পাঁচ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে নতুন পর্ষদ গঠন করা হলেও, একীভূতকরণের ফলে সেগুলোও বাতিল হবে। খুব শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এ প্রক্রিয়ার খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত হওয়ার পর বাস্তবায়ন শুরু হবে।
উপসংহার:
অতিরিক্ত লুটপাট, অর্থপাচার ও আর্থিক দুর্বলতায় টালমাটাল পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক এখন রাষ্ট্রীয় মালিকানায় একীভূত হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে ব্যাংক খাতকে স্থিতিশীল ও আমানতকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়েছে সরকার।