হত্যাযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে পঞ্চম দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ এই কার্যক্রম চলছে।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ শুনানি পরিচালনা করছে। এদিন রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করা হয় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে। মামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে রোববার (১৭ আগস্ট) চারজন নতুন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেন।
চতুর্থ দিনের শুনানিতে সাক্ষ্য দিয়েছেন আন্দোলনে আহত আব্দুস সামাদ, খুলনার শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার, নিহত শিক্ষার্থী সজল হোসেনের মা এবং আরও একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তারা আদালতে বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে তারা এই হত্যাযজ্ঞের বিচার দাবি করেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাক্ষ্যগ্রহণের গতি সন্তোষজনক। সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে চলতি বছরের অক্টোবর মাসের মধ্যেই সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হবে। আইনজীবীরা মনে করছেন, মামুনের সাক্ষ্য মামলার অগ্রগতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ তিনি আসামি থেকে রাজসাক্ষীতে পরিণত হয়েছেন।
এর আগে গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে টানা তিন সপ্তাহের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলিবর্ষণ ও দমনপীড়নে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন প্রাণ হারান। ট্রাইব্যুনালের ভাষ্যমতে, এই হত্যাযজ্ঞে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন সরাসরি নির্দেশ, উসকানি ও প্ররোচনার মাধ্যমে সম্পৃক্ত ছিলেন।