জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর পূর্ণাঙ্গ, সমন্বিত ও সংশোধিত খসড়া প্রেরণ করেছে। খসড়াটি নিয়ে মতামত জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামী ২০ আগস্ট বিকেল ৪টা। শনিবার রাতে কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
খসড়ায় একটি পটভূমি, সংস্কার কমিশনসমূহের কাঠামো, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম, ঐকমত্যে উপনীত হওয়া বিষয়সমূহ এবং সনদ বাস্তবায়নের আট দফা অঙ্গীকারনামা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে সংবিধান সংশোধন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, নির্বাচনকালীন বিধান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পদে মেয়াদসীমা এবং মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের প্রস্তাবসহ মোট ৮৪টি দফা আলোচিত হয়েছে।
পটভূমিতে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী ৫৩ বছরে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি; বরং বিশেষত ২০০৯ সালের পর থেকে শাসন ব্যবস্থায় ফ্যাসিবাদী চরিত্র বিকশিত হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমন, গুম-খুন ও নিপীড়নের মাধ্যমে একটি বিভীষিকাময় শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল।
খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে—সংসদ ভেঙে যাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার সর্বোচ্চ ৯০ দিন (প্রয়োজনে আরও ৩০ দিন) দায়িত্ব পালন, প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্বে থাকা এবং একইসঙ্গে দলীয় প্রধান না থাকা ইত্যাদি বিধান। এছাড়া জরুরি অবস্থায় নাগরিকের মৌলিক অধিকার খর্ব না করার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর আট দফা অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে—গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সংবিধানে সনদের বিধান অন্তর্ভুক্তকরণ, গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি প্রদান, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও পরিবারকে সহায়তা, আহতদের পুনর্বাসন এবং অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলো পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন পূর্বেই কার্যকর করা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, সনদের আইনী বাধ্যবাধকতা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে দেশ-বিদেশের সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে।