লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার জন্য সাম্প্রতিক মার্কিন প্রস্তাব নতুন করে আলোচনায় এসেছে। ইসরায়েল ও কিছু আঞ্চলিক শক্তির সমর্থনে তোলা এ পরিকল্পনা দেশটির অভ্যন্তরীণ বাস্তবতা, সামরিক সামর্থ্য ও আঞ্চলিক সমীকরণকে উপেক্ষা করেছে। ফলে এটি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
হিজবুল্লাহ কেবল একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী নয়, বরং ১৯৮০-এর দশক থেকে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব মোকাবিলায় গড়ে ওঠা এক বহুমাত্রিক শক্তি। দক্ষিণ লেবানন মুক্তি (২০০০) ও ৩৩ দিনের যুদ্ধে (২০০৬) সাফল্য তাদের জাতীয় প্রতিরোধের প্রতীকে পরিণত করেছে। এমন বাস্তবতায় নিরস্ত্রীকরণের যে কোনও উদ্যোগ শিয়া জনগোষ্ঠীর কাছে অস্তিত্ব সংকট হিসেবে প্রতীয়মান হয়।
অন্যদিকে লেবানন সেনাবাহিনী অর্থনৈতিক সংকট ও সীমিত সক্ষমতার কারণে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় পূর্ণ বিকল্প হতে পারছে না। ইসরায়েলি আগ্রাসন চলমান থাকায় হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা মানে দেশের একমাত্র কার্যকর প্রতিরোধশক্তিকে ভেঙে দেওয়া। এতে লেবাননের সার্বভৌমত্ব আরও দুর্বল হবে এবং রাজনৈতিক সংঘাত বাড়তে পারে।
এই পরিকল্পনা আসলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কৌশলেরই অংশ, যার লক্ষ্য প্রতিরোধ অক্ষকে দুর্বল করা। কিন্তু নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ছাড়া ও ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হলে হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণ বাস্তবায়ন অসম্ভব। বরং এ ধরনের চাপ লেবাননকে আরও অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেবে।
সুতরাং, যতদিন না বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে ওঠে এবং ইসরায়েল দখল ও হামলা বন্ধ করে, ততদিন হিজবুল্লাহর অস্ত্র লেবাননের জাতীয় নিরাপত্তার গ্যারান্টি হিসেবেই থেকে যাবে।