সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে অবস্থিত জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ‘সাদাপাথর’ থেকে নির্বিচারে পাথর লুটের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর কে এম নুরুন্নবী এই রিট দায়ের করেন। হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে রিটের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) আইনজীবী মীর কে এম নুরুন্নবী সাংবাদিকদের জানান, রিটে ঘটনার তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, সাদাপাথর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন এবং সরকারি দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নিষ্ক্রিয়তার ব্যাখ্যা চেয়ে একটি রুল জারির আবেদনও করা হয়েছে।
রিটে স্বরাষ্ট্রসচিব ছাড়াও পরিবেশ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সিলেটের জেলা প্রশাসক এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ মোট ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
এদিকে বুধবার (১৩ আগস্ট) জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় পাথর লুট ঠেকাতে ও উদ্ধারকৃত পাথর পুনরায় সাদাপাথরে ফিরিয়ে দিতে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে: সাদাপাথর ও জাফলং ইসিএ এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী মোতায়েন, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্টে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা, অবৈধ ক্রাশিং মেশিন বন্ধ করতে অভিযান, লুটের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং চুরি হওয়া পাথর আগের অবস্থানে ফিরিয়ে দেওয়া।
প্রশাসন জানিয়েছে, ধলাই নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর যেন পর্যটন এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্ট না করে, সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোয়ারি থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধে সরকারি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনের দুর্বল তদারকি ও প্রভাবশালী মহলের প্রভাবের কারণে অবাধে পাথর লুটের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসের পাশাপাশি পর্যটন শিল্পও গুরুতর হুমকির মুখে পড়ছে।