বাংলা শিল্পের কিংবদন্তি এস এম সুলতানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী আগামী ১০ আগস্ট পালিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে এস এম সুলতান ফাউন্ডেশন, নড়াইল জেলা প্রশাসন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
সকাল ৬টায় সুলতান কমপ্লেক্সে কোরআনখানি দিয়ে কর্মসূচি শুরু হবে। সকাল ৯টায় শিল্পীর সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ এবং সাড়ে ৯টায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। জেলা প্রশাসক ও সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি শারমিন আক্তার জাহান জানিয়েছেন, জন্মবার্ষিকী যথাযথভাবে পালনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া সুলতান শৈশবেই চিত্রাঙ্কনে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায়ের সহায়তায় কলকাতা আর্ট কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৪৪ সালে তৃতীয় বর্ষে প্রথম স্থান অধিকার করেন। প্রথাগত শিক্ষা ত্যাগ করে তিনি কাশ্মীরসহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ ও চিত্রাঙ্কনে মনোনিবেশ করেন।
বাংলার গ্রামীণ জীবন, কৃষক, জেলে, তাঁতি, প্রান্তর ও প্রকৃতি তার শিল্পকর্মের মূল বিষয়বস্তু। ১৯৫০-এর দশকে দেশে ফিরে তিনি শিশুদের জন্য ‘শিশুস্বর্গ’ ও ভ্রাম্যমাণ শিল্প শিক্ষা নৌকা প্রতিষ্ঠা করেন। শিল্পচর্চার পাশাপাশি পশু-পাখির প্রতি অনুরাগী সুলতান নিজ বাড়িতে একটি মিনি চিড়িয়াখানা গড়ে তুলেছিলেন।
চারুশিল্পে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৮২ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক লাভ করেন। এছাড়া ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সম্মাননা পান।
১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর দীর্ঘ অসুস্থতার পর এই অসাম্প্রদায়িক মহান শিল্পী যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নড়াইলের নিজ বাড়ির আঙিনায় তাকে সমাহিত করা হয়।