কী বলা হয়েছিল চিঠিতে?
২৯ জুলাই দিল্লির লোধি হাউস থানার অফিসার ইনচার্জ ‘বাংলা ভবন’-এর অফিসার ইনচার্জকে একটি চিঠি পাঠান।
কী বলা হয়েছিল চিঠিতে?
২৯ জুলাই দিল্লির লোধি হাউস থানার অফিসার ইনচার্জ ‘বাংলা ভবন’-এর অফিসার ইনচার্জকে একটি চিঠি পাঠান।
এই চিঠি সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলা শুধুই ভুল নয় — এটি একটি রাজনৈতিক অপকৌশল যা আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়কে হেয় করার চেষ্টা।
তৃণমূল কংগ্রেস চেয়ারপারসন মমতা ব্যানার্জি একে ‘বাঙালি বিরোধী ভারত সরকার’-এর ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেন এবং বলেন, ‘সংবিধানবিরোধী ভাষা ব্যবহার করে ভারতের বাঙালি ভাষাভাষীদের অপমান ও হেয় করা হচ্ছে।
এই ঘটনার পর তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যজুড়ে ‘ভাষা আন্দোলন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যা আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত চলবে বলে জানানো হয়েছে। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এটি কোনো সাধারণ কেরানির ভুল নয়। এটি বিজেপির পরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, যার মাধ্যমে তারা বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ বলে প্রচার করতে চাইছে।’
তিনি আরো বলেন, “বাংলাকে বিদেশি ভাষা বলা মানে আমাদের আত্মপরিচয়, সংস্কৃতি ও অস্তিত্বে আঘাত।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দিয়ে নিজেদের বাঙালিবিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়নে লিপ্ত হয়েছে। এটি বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।’ অন্যদিকে বিজেপির নেতা অমিত মালব্য পাল্টা অভিযোগে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী ভাষাকে অস্ত্র করে জনগণের আবেগ উসকে দিচ্ছেন। একটি আইনসম্মত তদন্তকে রাজনৈতিক বিতর্কে রূপ দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘সব অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভারতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় কোনো রাজনৈতিক নাটক বা ভোটব্যাংকের রাজনীতি চলবে না।’
এই বিতর্ক এমন সময়ে তৈরি হয়েছে, যখন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে অভিবাসী শ্রমিকদের লক্ষ্য করে অভিযান চালানো এবং তৃণমূলের পক্ষ থেকে ‘বাঙালি সম্মান’ রক্ষার দাবিতে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের আহ্বান জানানো হচ্ছে। বাংলা ভাষাকে ‘বিদেশি’ বলে দাগানোর এই ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে বড় বিতর্ক তৈরি করেছে এবং আগামী নির্বাচনের আগে বাঙালি পরিচিতির প্রশ্নে রাজনীতি আরো তীব্র হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।