মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণকালীন বিধ্বস্ত হয়ে ঘটে হৃদয়বিদারক এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এতে অনেক শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক, অভিভাবক নিহত হয়। আহত হয় অর্ধশত’র অধিক। এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৪শে জুলাই) প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত, আহত ও নিখোঁজদের ব্যাপারে একটি বিবৃতি প্রদান করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে স্কুল শাখার ১৮ জন শিক্ষার্থী, ২ জন শিক্ষক এবং ২ জন অভিভাবকের। গুরুতর আহত হয়েছেন ৫১ জন—তাদের মধ্যে ৪০ জন শিক্ষার্থী, ৭ জন শিক্ষক, ১ জন অভিভাবক, ১ জন আয়া ও ১ জন পিয়ন রয়েছেন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৩ শিক্ষার্থী ও ২ অভিভাবক।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ২২ জুলাই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং নিহত-আহতদের তথ্য হালনাগাদের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ।
গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। তাদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে জরুরি চিকিৎসা সেল।
শোকসন্তপ্ত মাইলস্টোন পরিবারকে সান্ত্বনা জানাতে পাশে দাঁড়িয়েছে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, এনজিও, গণমাধ্যম ও দেশবাসী।
মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম বিবৃতিতে বলেন, “আমরা আমাদের সন্তানদের হারিয়ে বাকরুদ্ধ। এই দুঃসময়ে যারা পাশে থেকেছেন, তাদের সবার প্রতি আমাদের গভীর কৃতজ্ঞতা।”
প্রসঙ্গত, ২১ জুলাই আনুমানিক দুপুর ১টা ১২ মিনিট থেকে ১টা ১৪ মিনিটের মধ্যে কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসে অবস্থিত একটি দোতলা ভবনে বিমানটি আছড়ে পড়ে।
ঘটনার সময় শিক্ষার্থীদের ছুটি হয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয় চত্বরে অভিভাবকদের সঙ্গে অপেক্ষমাণ ছিল কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী। হঠাৎ ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়ে পুরো মাইলস্টোন পরিবার।
প্রাথমিক উদ্ধারে এগিয়ে আসেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থীরা, কর্মচারীরা ও আশপাশের এলাকাবাসী। দ্রুতই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও র্যাবের প্রশিক্ষিত ইউনিটসমূহ এবং সমন্বিতভাবে উদ্ধার কাজ শুরু হয়।