২১ জুলাইয়ের বিমান দুর্ঘটনায় যখন আগুনে জ্বলছিল মাইলস্টোন স্কুল ভবন, ঠিক তখনই মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘদিনের সহকর্মী, প্লে-গ্রুপের খালা শাবুজা বেগম। নিজের প্রাণ তুচ্ছ করে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া শিশুদের বাঁচাতে গিয়ে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন তিনি। বর্তমানে তিনি আইসিইউতে, বেড নম্বর ৫-এ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
১৬ বছর ধরে মাইলস্টোনে কর্মরত শাবুজা ছিলেন শিশুদের সবচেয়ে আপনজন। কেবল সহকর্মী বা খালা নন—ছোট্ট প্রাণগুলোর কাছে তিনি ছিলেন নির্ভরতার আশ্রয়।
মাত্র ৪৩ দিন আগে কিডনি রোগে ভুগে তাঁর স্বামী মারা যান। জীবনযুদ্ধে বিধবা মেয়ে রুমানাকে সঙ্গে নিয়ে একাকী লড়াই করছিলেন শাবুজা—একইসাথে মা, সহকর্মী এবং উপার্জনকারী হিসেবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় তিনি প্রথমে নিরাপদে বের হয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ভিতরে শিশুদের কষ্টে ছটফট করতে দেখে আবার আগুনের ভেতরে ছুটে যান। নিজের শরীর দিয়ে শিশুদের ঢেকে দেন—একজন খালার মাতৃস্নেহ তখন আগুনকেও ভয় পায়নি।
আজ তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। কিন্তু এই জাতি তাকে মনে রাখবে সাহস, ত্যাগ ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে।
শাবুজা বেগম—এই নাম শুধু একজন কর্মীর নয়, এটি এক সাহসিক হৃদয়ের নাম।