মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ভয়াবহ ঘটনার পরদিনও স্মৃতি যেন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে শিক্ষার্থীদের স্বজনদের। স্কুল ভবনের পুড়ে যাওয়া দেয়াল, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ আর একাকার হয়ে যাওয়া ক্লাসরুমের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন আশফিয়া মুমতাজ শিল্পী।
তিনি সেই শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মোহাইমিন আরিয়ানের মা — যার ছেলে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে ফিরেছে। শিল্পী বলেন, “প্রতিদিন টিফিন দিই, কিন্তু সেদিন দিতে পারিনি। তাই টাকা দিয়েছিলাম খাবার কিনে খাওয়ার জন্য। আর সেখান থেকেই শুরু হলো ওর বেঁচে ফেরার গল্প।”
ঘটনার দিন কোচিংয়ে যাওয়ার জন্য টিফিন খেতে চেয়েছিল আরিয়ান। শিক্ষক তাকে নামতে বারণ করলেও সে অনুরোধ করে নিচে নামে। আর তখনই ঘটে বিস্ফোরণ।
শিল্পী জানালেন, “ওর স্যার আর এক বন্ধু সাথেই নিচে নেমেছিল। কয়েক কদম আগাতেই এক বিকট শব্দ, আগুন আর ধোঁয়ায় চারদিক অন্ধকার। ও দৌড়ে স্কুলের বাইরে চলে যায়।”
চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, “আমি টিফিন দিতে পারিনি বলেই হয়তো বেঁচে গেছে আমার ছেলেটা। কিন্তু ওর বন্ধুরা আর ফিরে আসেনি…”
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্কুল ভবন আংশিক ধসে পড়ে। নিহত হয় একাধিক শিক্ষার্থী ও স্কুল স্টাফ। মঙ্গলবার দুপুরে ভবনের উদ্ধারকাজ শেষে নিরাপত্তা বাহিনী কড়াকড়ি তুলে নেয়। এরপর স্কুল চত্বরে ঢুকতে শুরু করেন স্বজন ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
মাইলস্টোন স্কুলের আকাশে এখনো ভাসে কান্না আর বিচ্ছেদের আর্তনাদ। একদিকে কারো সন্তান অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে, অন্যদিকে অনেক মা-বাবার কোলে ফিরে আসেনি প্রিয় মুখ।