২১ জুলাই রাজধানী উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই দেশের সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিক যে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছে- তা দায়িত্ব, মানবিকতা ও দক্ষতার অনন্য এক উদাহরণ হয়ে থাকবে।
সেদিন ফাইটার বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের সদস্যরা। নিজেদের জীবন বাজি রেখে বাহিনীর সদস্যরা এ দিন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষায়।
ঘটনার দিন সেনা সদস্যরা কেউ নিজেদের গায়ের ইউনিফর্ম খুলে হতাহতদের সুরক্ষা দেয়। যাতে তা না দেখে কোমলমতি শিশুরা যেন আতঙ্কিত না হয়।
তাৎক্ষণিক শত শত স্কুল শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে সেনাসদস্যরা এ দিন লোহার গেটকে সিঁড়িতে পরিণত করে বহু শিশু ও শিক্ষক-শিক্ষিকাকে উদ্ধার করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের চোখে- দুর্ঘটনার পরপরই সেনা সদস্যরা ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরি সেবা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন এবং দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা এলাকাটি থেকে আহতদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
এ সময় এক সেনা সদস্যের মানবিক সাহসিকতা বিশেষভাবে চোখে পড়ে। একজন শিক্ষার্থী ক্লাসরুমে আটকে পড়ে আগুনের তাপে অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। বিষয়টি সেনা সদস্যের চোখে পড়ার পর তিনি বালতির পানি এনে ছাত্রটির গায়ে ঢালেন এবং পরে হাতুড়ি দিয়ে জানালার গ্রিল ভেঙে তাকে জীবিত উদ্ধার করেন।
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে হেলিকপ্টার ও অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে দ্রুত সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেনাবাহিনীর এই তৎপরতায় অসংখ্য মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
সেদিন সেনা সদস্যদের এমন দায়িত্বনিষ্ঠ ও মানবিক দায়িত্ব পালনকে অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। সেনাবাহিনীর মানবিক দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো, দেশের সংকটময় মুহূর্তে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবকিছু ছাপিয়ে মানবতার নিবেদিত প্রাণ।