রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫০ অপরাহ্ন

চাল ভেঙে আমার ঘরের মধ্যে পড়েন পাইলট

উত্তরা নিউজ প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম: বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫
সংগৃহীত ছবি | উত্তরা নিউজ

মঙ্গলবার শোকের চাদরে ঢেকে যায় উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজ। আগুনের লেলিহান শিখায় একঝাঁক প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থী ঝরে যাওয়ার একদিন পরও বেদনার স্তব্ধতা ভেদ করে উঠছিল কাঁদো কাঁদো শব্দ। সহপাঠীর হাহাকারে কেঁপে উঠছিল স্কুল প্রাঙ্গণ, আর সহকর্মী হারিয়ে শিক্ষকরাও নির্বাক।

এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন স্কুলের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন। সোমবার তিনি নিজে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু চোখের সামনে পুড়ে যেতে দেখেছেন তাঁর স্নেহের শিক্ষার্থীদের।

বিবিসি বাংলার কাছে তিনি জানান, “একটা প্রচণ্ড শব্দ হয়, মনে হলো যেন কিছু একটা বিস্ফোরিত হলো। সঙ্গে সঙ্গে রুম থেকে বের হয়ে দেখি ভবনের একটি অংশ ধসে পড়েছে। সবাই চিৎকার করে উঠলো—আগুন! আগুন!”

নাসিরউদ্দিন বলেন, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই সেখানে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু ততক্ষণে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। “আমরা বারবার পানি দিচ্ছিলাম, তবু আগুন থামছিল না। এরই মধ্যে দেখি আমার পরিচিত ছাত্ররা নাম ধরে চিৎকার করছে—‘স্যার, আমাদের বাঁচান!’”

তিনি জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কয়েকজন সহকর্মী মিলে ১২-১৩ জন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেন। এরপর নিজের বিভাগে ফিরে গিয়ে দেখতে পান, তার অফিস কক্ষ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। ডেস্ক ভেঙে চুরমার, আর ঘরের এক কোণে পড়ে আছে একটি প্যারাসুট।

“বিমান বাহিনীর সদস্যরা এসে সার্চ করে জানাল, ঘরের ভেতরেই পড়েছেন বিমানটির পাইলট। আমার কক্ষের টিনের ছাদ ভেঙে তিনি নিচে পড়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয় তাকে,” বলেন তিনি।

মাইলস্টোন স্কুলের প্রাঙ্গণ এখন শুধুই কান্না, নিস্তব্ধতা আর জ্বলন্ত স্মৃতির ভর। ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক—সবাই যেন বাকরুদ্ধ। একটি প্রশিক্ষণ বিমান কীভাবে শিক্ষাঙ্গনে এমন মৃত্যু ও ধ্বংসের ছাপ রেখে যেতে পারে—তা নিয়েই প্রশ্ন, ক্ষোভ আর গভীর শোক।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102