গাজার প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র শিফা হাসপাতালের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবু সালমিয়া এক হৃদয়বিদারক তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, গত ৭২ ঘণ্টায় শুধুমাত্র ক্ষুধা ও চরম অপুষ্টির কারণে অন্তত ২১ জন শিশু মারা গেছে। তিনি বলেন, “আমরা শিশুদের চোখের সামনে ক্ষীণ হতে দেখছি। তাদের বাঁচানোর মতো খাবার বা ওষুধ কিছুই আমাদের হাতে নেই।”
ড. সালমিয়া আরও জানান, পুরো গাজা উপত্যকায় বর্তমানে প্রায় ৯ লাখ শিশু চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে। এর মধ্যে অন্তত ৭০ হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। অবরুদ্ধ গাজায় টানা যুদ্ধ, রফতানি ও আমদানিতে বাধা এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধার ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
শিফা হাসপাতালসহ গাজার অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রে ওষুধ, খাবার, জ্বালানি ও চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক সময় বিদ্যুৎ বা অক্সিজেনের অভাবে ইনকিউবেটরে থাকা শিশুরাও মারা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা কার্যত খালি হাতে লড়ছেন এক নির্মম বাস্তবতার বিরুদ্ধে।
গাজার এই পরিস্থিতিকে ড. সালমিয়া একটি “শিশু গণহত্যা” হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তা এবং মানবিক সহায়তার বাধাগুলো শিশুদের ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
জাতিসংঘ, রেড ক্রসসহ মানবিক সংস্থাগুলো বারবার গাজায় অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা প্রবেশের আহ্বান জানালেও এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না।
গাজার আকাশে গোলার আওয়াজ থেমে গেলেও, এখন ক্ষুধা আর অপুষ্টির নীরব তাণ্ডব শিশুদের জীবন কেড়ে নিচ্ছে—একটি সভ্য পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম দৃষ্টান্ত হয়ে।