বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন ডা. সাখাওয়াৎ হোসেন সায়ন্থ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, সরকার যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন না দেয়, তাহলে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে জরুরি অবস্থার পথে যেতে পারে। এতে ভারতীয় প্রভাব ফিরে আসার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, বিএনপি এবং তাদের সমমনা দলগুলোর এখন উচিত কোনোভাবেই নির্বাচন পেছানোর প্রস্তাবে রাজি না হওয়া। বরং সরকারকে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে হবে শক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে।
ডা. সায়ন্থ হুঁশিয়ার করে বলেন, সরকার যদি চাপের মুখে নির্বাচন না দেয়, তবে সেটি দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। প্রশাসনের ভেতরেও অসন্তোষ তৈরি হতে পারে, ফলে সরকার হয় পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে, না হয় জরুরি অবস্থা জারি করবে।
তার মতে, জরুরি অবস্থা জারি হলে কেবল সরকার নয়, বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য দল যারা আন্দোলন ব্যর্থ করতে চায়, তারাও দায় এড়াতে পারবে না। “রাজনীতিতে যারা কৌশলের নামে সুবিধা নিতে চায়, তাদেরও শেষ রক্ষা হবে না,” বলেন তিনি।
সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নভেম্বর পেরিয়ে গেলে আর সময় থাকবে না, তখন আন্দোলন ছাড়া পথ থাকবে না।” তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি বর্তমানে ‘মাইনকা চিপায়’ পড়েছে— এনসিপি ও জামায়াতের মতো কিছু দল কৌশলে বিএনপিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে।
ড. সায়ন্থ সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও সমালোচনা করে বলেন, ২০০৬ সালে তিনি ‘কিংস পার্টি’ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন, আর এখনো আন্তর্জাতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে।
সরকারের নানা কর্মকাণ্ড জনসমর্থন হারাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শিক্ষাব্যবস্থা, প্রশাসন ও বিনিয়োগখাতের অস্থিরতা, বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই সংকট থেকে উত্তরণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া বিকল্প নেই।”
তিনি সরকারকে অবিলম্বে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানান— নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই হবে এবং সে অনুযায়ী তফসিল ঘোষণা করতে হবে। “সরকার যদি এটুকু না করে, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে,” বলেন তিনি।
ডা. সায়ন্থ বলেন, “বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল। তাদের বাইরে রেখে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। আন্দোলন হলে এবার তা হবে আরও বিস্ফোরক, কারণ জনগণের ভেতরে ক্ষোভ জমে আছে।”
তার মন্তব্য, এখনই সময় একটি সুষ্ঠু, সৎ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সংকট নিরসনের— নইলে সামনে অপেক্ষা করছে আরও অস্থিরতা ও হিংসা।