বিশিষ্ট কবি, প্রাবন্ধিক ও লোকসংস্কৃতি গবেষক মহিবুর রহিম আর নেই। বুধবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কাউতলীতে নিজ বাসভবনে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫২ বছর।
দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন এই বরেণ্য সাহিত্যিক। স্ত্রী, তিন পুত্রসহ তিনি রেখে গেছেন বহু গুণগ্রাহী ও ভক্ত।
মহিবুর রহিম ছিলেন বাংলা একাডেমির জীবন সদস্য এবং আমৃত্যু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১৯৭৩ সালের ১৫ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার ছাতিরচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমির তরুণ লেখক প্রকল্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
সাহিত্যের প্রতি গভীর অনুরাগ থেকেই তাঁর সাহিত্যভুবনে পদচারণা শুরু। প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: ‘অতিরিক্ত চোখ’, ‘হে অন্ধ তামস’, ‘দুঃখগুলো অনাদির বীজপত্র’, ‘হাওর বাংলা’, ‘ভাটি বাংলার লোকভাষা ও লোকসাহিত্য’ প্রভৃতি।
লোকসাহিত্য ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায়ও তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির ‘জাতীয় সাংস্কৃতিক সমীক্ষা গ্রন্থমালা’সহ বাংলা একাডেমির বিভিন্ন প্রকল্পে তাঁর লেখা স্থান পেয়েছে।
সাহিত্য ও গবেষণায় অবদানের জন্য তিনি ‘প্রজ্ঞা পদক’, ‘রকি সাহিত্য পদক’, ‘মেঠোপথ সাহিত্য পদক’, ‘শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাহিত্য পদক’, ‘সুকুমার রায় সাহিত্য সম্মাননা’ ও সর্বশেষ ‘আল মাহমুদ সাহিত্য সম্মাননা ২০২৪’-এ ভূষিত হন।
বাংলা সাহিত্য, লোকসংস্কৃতি ও চিন্তার জগতে মহিবুর রহিমের শূন্যতা অপূরণীয় হয়ে রইল।