ঢাকার মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডকে সরকার সর্বোচ্চ গুরত্ব সহকারে দেখছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “এ ঘটনায় দায়েরকৃত প্রাথমিক তথ্যবিবরণীতে উল্লেখিত ১৯ জনের মধ্যে সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
একজন ছাড়া ছয় জনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে ধরা হয়েছে। ঢাকার বাইরে গোয়েন্দা দল বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।
তদন্তে আসামি পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কোনো শিথিলতা ছিল কিনা তাও সরকার গুরত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবে।”
রবিবার (১৩ জুলাই) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১১তম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এসময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আজকের বৈঠকে মিটফোর্ডের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা একটা সভ্য সমাজে কোনো অবস্থায় মেনে নেওয়া যায় না।”
তিনি জানান, ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাসহ সম্প্রতি যেসব হতাকাণ্ড ঘটেছে এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সরকার বদ্ধ পরিকর। এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী অতন্ত তৎপর। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনে যাচ্ছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করছে।”
সোহাগ হত্যার বিচার দ্রুত ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে খুলনা হত্যাকাণ্ডেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার বিশ্বাস করে অপরাধী অপরাধীই, সে যে দলের হোক না কেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় কিংবা অন্য কোনো বিবেচনায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে না, ভবিষ্যতেও দেওয়া হবে না। কোনো অপরাধীকে পুলিশ প্রশ্রয় দেবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, “আজকে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে।
চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারীদের কর্মকাণ্ড রোধে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, দেশে অস্থিতিশীলতা, অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উস্কানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নারী শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মাদকের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কিত আলোচনা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “বৈঠকে আমাদের গামেন্টস শিল্প কারখানা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান নিয়ে এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের শহীদদের মামলার রেকর্ড ও তদন্তে অগগ্রগতি নিয়েও কথা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা নিয়ে।”