২০২৪ সালের ৪ আগস্ট—কোটা সংস্কার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের উত্তাল সময়ে শেরপুরে প্রশাসনের গাড়িচাপায় প্রাণ হারান তরুণ শিক্ষার্থী মাহবুব আলম (১৯)। শেরপুর সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুব সেদিন মিছিলে অংশ নিতে গিয়ে খরমপুর এলাকায় নিহত হন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে চালানো গাড়ির নিচে পড়ে। একই ঘটনায় মারা যান আরেক ছাত্র শারদুল আশীষ সৌরভ; আহত হন অনেকে।
মাহবুব ছিলেন পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ, স্থানীয়ভাবে আইটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলেন এবং ফ্রিল্যান্স প্রজেক্টেও কাজ করতেন। পরিবারের ভাষ্য মতে, তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না; ছিলেন স্বপ্নবান এক তরুণ, যিনি কারিগরি শিক্ষার আলো ছড়াতে চাইতেন।
তার বড় ভাই মাজহারুল অভিযোগ করেন, “প্রশাসন আর ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন একসঙ্গে হামলা চালায়—একদিকে গুলি, অন্যদিকে গাড়ি তুলে দেয় মিছিলে।” মাহবুবের মা মাহফুজা খাতুন বিচার চেয়ে বলেন, “এক বছর পার হয়ে গেল, বিচার কিছুই হলো না। আমি চাই, আন্তর্জাতিক আদালতে এই হত্যার বিচার হোক।”
মাহবুবের স্মৃতিকে ধারণ করে গড়ে উঠেছে ‘শহীদ মাহবুব আলম মেমোরিয়াল ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’। তার বোন লিবিয়া বলেন, “ভাইয়ের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখাই এখন আমাদের দায়িত্ব।”
উল্লেখ্য, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম শাকিলের নির্দেশে চালক হারুনুর রশীদ গাড়ি চালিয়ে দেন ছাত্রদের ওপর। এ ঘটনার পরও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিণত হয় গণঅভ্যুত্থানে, যার মাধ্যমে পতন ঘটে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের।