বিশ্বজুড়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুবসমাজের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে কিশোর ও তরুণদের মধ্যে মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং হতাশা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এদের মধ্যে ছেলেরা সাহায্য চাওয়ার ক্ষেত্রে আশঙ্কাজনকভাবে পিছিয়ে রয়েছে।
গত কয়েক দশকের গবেষণা বলছে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা গ্রহণে অনাগ্রহী। ২০২৩ সালে প্রকাশিত এক মার্কিন গবেষণায় দেখা গেছে, ছেলেরা মেয়েদের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কম হারে মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা চায়। ফলে মানসিক সমস্যাগুলোর প্রকৃত চিত্র অনেক ক্ষেত্রেই আড়ালেই থেকে যায়।
এই প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালে ইউরোপিয়ান চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি জার্নাল-এ প্রকাশিত এক পর্যালোচনা আরও উদ্বেগের ইঙ্গিত দেয়। পর্যালোচনায় বলা হয়, “এটি অত্যন্ত চিন্তার বিষয় যে কিশোর ও তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার হার তুলনামূলকভাবে বেশি, অথচ তারা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে আগ্রহ দেখায় না।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, সমাজে ছেলেদের মধ্যে “মাচো” বা দৃঢ় মানসিকতার ধারণা, দুর্বলতা প্রকাশে সামাজিক নিষেধ এবং মানসিক সমস্যা নিয়ে কথা বলাকে লজ্জার বিষয় মনে করায় অনেকেই সাহায্য চাওয়ার আগেই নিজেকে গুটিয়ে নেয়।
এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বিশেষজ্ঞরা কিশোর ও তরুণদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সহানুভূতিশীল ও গ্রহণযোগ্য সহায়তা পরিবেশ তৈরি করার ওপর জোর দিচ্ছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার এবং সমাজের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তারা।