বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫৮ অপরাহ্ন

ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা ৬ মাস করার দাবি বিজিএমইএ সভাপতির

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম: বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে বিজিএমইএর একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করে। এ সময় বিজিএমইএ নেতারা পোশাকশিল্পে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি একগুচ্ছ দাবি তুলে ধরেন।বুধবার (২ জুলাই) আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে আয়োজিত এই বৈঠকে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন সহসভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান, সহসভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী এবং সদস্য মো. কামাল উদ্দিন।

ড. আনিসুজ্জামানের সঙ্গে বৈঠকে বিজিএমইএ নেতারা তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো, ব্যাংকসংক্রান্ত সমস্যা, এনবিআর সংক্রান্ত বিষয়, শিল্পে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য করণীয়, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা উন্নয়ন, ট্রেড লাইসেন্সসহ ইআরসি, আইআরসি এবং অন্যান্য লাইসেন্স নবায়নে জটিলতা দূরীকরণ ও অন্তত ৫ বছর মেয়াদি করা, রাজউক কর্তৃক ড্যাপের আওতায় ইতিপূর্বে নির্মিত কারখানাগুলোর হয়রানি শিকার হওয়াসহ আরো কিছু বিষয়ে সমাধান চান সরকারের কাছে।এ ছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ শ্রেণিকরণ নীতিমালা নিয়ে গুরুত্বসহকারে আলোচনা করা হয়।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা ৯ মাস থেকে কমিয়ে ৩ মাস করা হয়েছে। অনেক সময়ে আর্থিক কারণে উদ্যোক্তা এই সময়ের মধ্যে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারেন না। ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা ৬ মাসে উন্নীত করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে মাহমুদ হাসান খান বলেন, এটি করা হলে ৫০০-৬০০ পোশাক কারখানা ক্লাসিফায়েড ঋণ থেকে রক্ষা পাবে।
তিনি বলেন, প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট খাতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমটি বর্তমানে বন্ধ আছে। এই স্কিমটি আবার চালু করে ২০৩০ সাল পর্যন্ত কার্যকর করা দরকার। তা করা হলে উদ্যোক্তাদের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল জোগানে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের সহায়তায় রপ্তানির বিপরীতে একটি ফোর্সড তহবিল গঠনেরও প্রস্তাবনা দেন, যেখান থেকে সংকটের সময়ে সংশ্লিষ্ট কারখানা শ্রমিকদের বেতন প্রদান ও অন্যান্য সমস্যা সমাধান করতে পারবে।বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, পোশাক শিল্পের রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রমে কাস্টমস সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগুলোর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে এবং এ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে গিয়ে শিল্পে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়, ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলোতেও অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব হয়।

বৈঠকে বিজিএমইএ নেতারা চট্টগ্রা বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও অনুরোধ জানান। এ ছাড়া বৈঠকে বলা হয়, তীব্র গ্যাস সংকটের প্রভাব পড়েছে পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানাগুলোতে। বিজিএমইএ সভাপতি গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য ভোলায় আবিষ্কৃত বিপুল মজুদের নতুন গ্যাস কূপগুলো থেকে অবিলম্বে গ্যাস উত্তোলন করে তা জাতীয় গ্রিডে নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। শিল্পে গ্যাসের চাহিদা পূরণে এলএনজি আমদানি বৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা হয়।বৈঠকে বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ বলেন, গাজীপুর আশুলিয়ায় পোশাক অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সরকার জমি বরাদ্দ দিলে পোশাক উদ্যোক্তারা ওইসব জমিতে শ্রমিকদের জন্য পর্যায়ক্রমে হাসপাতাল, আবাসন, স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী।

বিজিএমইএ নেতারা মুন্সীগঞ্জে বন্ধ হয়ে যাওয়া গার্মেন্ট পল্লী স্থাপন কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা এবং চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলোর জন্য একটি সমন্বিত শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলতে জমি বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সহযোগিতা কামনা করেন।

ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলের বক্তব্য শুনে বলেন, ‘সরকার পোশাক শিল্প সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে অবগত আছে এবং এ শিল্পকে সম্ভাব্য সব সহযোগিতা প্রদান করে যাবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102