বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৭ অপরাহ্ন

সাক্ষাৎকারের চাপে বাড়ি ছেড়েছেন মুরাদনগরের ভুক্তভোগী সেই নারী

অনলাইন ডেক্স রির্পোট
  • আপডেট টাইম: বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫
কুমিল্লার মুরাদনগরে সম্প্রতি পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়া নারী তার বাবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই নারী, তার মা–বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিদিন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় করছিলেন। গণমাধ্যমকর্মী ও ইউটিউবারদের বারবার সাক্ষাৎকারের চাপে ভুক্তভোগীর জীবন হয়ে উঠেছিল যন্ত্রণাময়।এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে তিনি পরিবারসহ সরে যান।ঘটনার সূত্রপাত ২৬ জুন রাতে। স্থানীয় এক ব্যক্তি ফজর আলীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন ওই নারী। ঘটনার সময় স্থানীয় কিছু লোক ফজর আলীর সঙ্গে নির্যাতনের শিকার ওই নারীকেও নির্মমভাবে মারধর করেন।তাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয় এবং সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় নারী নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে দুটি মামলা করেন ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত ফজর আলীকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, সোমবার বিকেলে ভুক্তভোগী নারী তার দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি ত্যাগ করেন।পুলিশের সহায়তায় তিনি তার স্বামীর বাড়ি কিংবা কোনো আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। পরে তার মা-বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যরাও বাড়ি ছেড়ে চলে যান।মঙ্গলবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ ওই বাড়িতে আসেন। তার আগমনের খবরে সকাল থেকেই হাজারো মানুষ বাড়ির সামনে ও আশপাশে ভিড় করেন। ধারণা করা হচ্ছে, এ ধরনের ভিড় ও বাড়তি উত্তেজনার আশঙ্কায় আগেই ওই পরিবার সরে যান।কুমিল্লা জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিনের অনাকাঙ্ক্ষিত ভিড় এবং গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে পাওয়া চাপ ভুক্তভোগী পরিবারের জন্য দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। কেউ কেউ নিয়ম ভেঙে ভিডিওতে ভুক্তভোগীর মুখ প্রকাশ করছেন, যা তার নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার জন্য হুমকি। এমন পরিস্থিতিতে তিনি পুলিশের সহায়তা চান এবং পুলিশ তাকে নিরাপদে সরে যেতে সাহায্য করে।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী কোথায় গেছেন, তা নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে তিনি শ্বশুরবাড়ি কিংবা আত্মীয়ের বাসায় উঠেছেন। তার নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে পুলিশ সহযোগিতা করবে।এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে পুলিশের দাবি, আরও কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যদিও তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।এদিকে, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া চার যুবক—মোহাম্মদ আলী ওরফে সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিক—কারাগারে রয়েছেন। তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ। আগামী বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে শুনানি হবে।

ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের কাছ থেকে মোবাইলফোন জব্দ করা হয়েছে এবং ভিডিও কোথা থেকে ছড়ানো হয়েছে, তা জানার জন্য ফোনগুলো ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102