বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন

নিষিদ্ধ চায়না জালে মাছ শিকার, হুমকিতে দেশি মাছ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার হাওরগুলোতে নিষিদ্ধ ‘চায়না জাল’ ব্যবহার করে অবাধে চলছে মাছ নিধন। এই সর্বনাশা জালের ফাঁদে ছোট-বড় সব ধরনের মাছ, বিশেষ করে মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে দেশীয় মাছের অস্তিত্ব। প্রশাসনের কার্যকর নজরদারির অভাবে এ ধ্বংসযজ্ঞ চলায় বোয়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।মঙ্গলবার (২৪ জুন) সরেজমিনে উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের জালিয়ার হাওর ঘুরে দেখা যায়, জেলেরা প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ চায়না জাল ব্যবহার করে মাছ ধরছেন।স্থানীয়রা জানায়, এক মাস ধরে হাওরের বিভিন্ন খাল ও বিলে এই ধ্বংসাত্মক জাল ব্যবহার করে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মাছ ধরা হচ্ছে। একটি অসাধু চক্র সাধারণত বিকেল বা সন্ধ্যায় হাওরের বিভিন্ন পয়েন্টে জাল পেতে রাখে এবং পরদিন ভোরে তুলে নেয়। এসব জালে ধরা পড়া মাছের মধ্যে দেশীয় প্রজাতির পোনা মাছই বেশি, বিশেষ করে মূল্যবান বোয়াল মাছের পোনা ব্যাপক হারে নিধন হচ্ছে।স্থানীয়রা আরো জানায়, মাহমুদপুর বাজারে প্রতিদিন ভোরে এসব পোনা মাছ বিক্রি হতে দেখা যায়।তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত বছরগুলোতে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ জাল জব্দ করা হতো। কিন্তু এই বছর এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, ফলে জেলেরা অবাধে মাছ নিধন চালিয়ে যাচ্ছে।চারিতলা গ্রামের ব্যবসায়ী রাসেল মিল্কীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, অতি মুনাফালোভী কিছু জেলে এরকম অবৈধ কাজ করে যাচ্ছে। তারা হাওরের নির্দিষ্ট স্থানে চায়না জাল ফেলে প্রতিদিনই দেশীয় পোনামাছ ধরছে।অথচ দেশের মৎস্য আইন অনুযায়ী এই ধরনের ক্ষতিকর জাল ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। মৎস্য অফিসের মাধ্যমে অবৈধভাবে মাছ ধরার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার জন্য জোর দাবি জানান তিনি। পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা আয়েশ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরা শুধু মাছ নয়, পুরো জলজ পরিবেশব্যবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। দেশের মৎস্য ভাণ্ডার রক্ষায় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ টিকিয়ে রাখতে হলে এখনই প্রয়োজন কঠোর প্রশাসনিক নজরদারি, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিকভাবে এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ। মাছের বংশবৃদ্ধি এবং পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দাবি জানান তিনি।কেন্দুয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দেবাশীষ ঘোষ বলেন, ‘চায়না জাল দিয়ে অবৈধভাবে পোনামাছ ধরার বিষয়টি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এ জাল দিয়ে মাছ ধরা দেশের মৎস্য আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ও অবৈধ। তাছাড়া এ জাল দিয়ে পোনা মাছ ধরা মাছের প্রজনন ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে। যারা অবৈধ চায়না জাল দিয়ে পোনামাছ ধরছে তাদের বিরুদ্ধে অচিরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102