জুতার মালা গলায় পরিয়ে সাবেক প্রধান নির্াচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নুরুল হুদাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা।
আজ (রবিবার) সন্ধ্যায় উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টর নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা নুরুল হুদার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে নুরুল হুদা উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের বাসায় লুকিয়ে ছিল। মাঝেমধ্যে মুখ ঢেকে বাসা থেকে বাইরে বের হত সে। সন্ধ্যায় বাসায় নুরুল হুদা থাকার খবর পেয়ে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতারা তাকে বাড়ি থেকে ধরে পুলিশে দেয়। বাইরে আনার পর উত্তেজিত তার ওপর ডিম নিক্ষেপ করে এবং গলায় জুতার মালা পরায়।
এ বিষয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ডিএমপি উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) আহাম্মদ আলী বলেন, সন্ধ্যা ৬টার দিকে উত্তরা ৫ নম্বর থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। উনার (নুরুল হুদা) নামে শেরে বাংলা থানায় মামলা রয়েছে। বর্তমানে উনি ডিবি হেফাজতে আছে।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার আমলে প্রহসনের নির্বাচনের অভিযোগ সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলার আবেদন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলার আবেদন জমা দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল।
যে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলার আবেদন করা হয়, তাদের মধ্যে আছেন ২০১৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ, নির্বাচন কমিশনার মো. আবদুল মোবারক, আবু হানিফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ ও তৎকালীন নির্বাচন সচিবসহ প্রধান নির্বাচন কমিশন অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা।
এ তালিকায় আরও আছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা।
অভিযোগে আরও আসামি করা হয় ২০১৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি এ কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে।
অভিযোগে একই সময়ে দায়িত্ব পালন করা তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী, তৎকালীন ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক প্রধান (অজ্ঞাত), জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক প্রধান (অজ্ঞাত) এবং পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সৈয়দ নুরুল আলমের নাম উল্লেখ আছে।
সর্বশেষ ২০২৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব, আলমগীর হোসেন, আনিছুর রহমানসহ তৎকালীন নির্বাচন সচিবেরও নাম আছে ওই আবেদনে।
এর আগে আজ সকালে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীনের কাছে আরেকটি আবেদন জমা দেয় বিএনপির প্রতিনিধিদলটি।
আবেদনে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতা–কর্মীদের গ্রেফতার, গুরুতর জখম ও হত্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। পাশাপাশি তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের ওপর হওয়া হামলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় তার বিরুদ্ধে নির্বাচন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়