গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত ক্যাপিটা টাইমস স্কয়ার মার্কেটে দোকান কিনে প্রতারণার শিকার হয়েছেন প্রায় ৫ শতাধিক ক্রেতা। রাজধানীর বনানীতে ক্যাপিটা ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড প্রতিষ্ঠান এই মার্কেটটির উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা।
নভেম্বর, ২০০৫! ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শুরু থেকেই বিভিন্ন প্রলোভনমূলক প্রচারণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৩৬ কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের শর্তে দোকান বিক্রি শুরু করে। এর এই প্রলোভনেই পা দেয় শতাধিক ক্রেতারা। তবে দুই-আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও নির্মাণে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা বাড়িয়ে ২০১০ পর্যন্ত করা হলেও কাজের অগ্রগতি হয়নি। ২০১২ সালে নির্মাণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ছাড়াই স্কয়ার ফুট প্রতি ১,৬৫০ টাকা করে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান। যা চুক্তি শর্তের বহির্ভুত।
২০১৩ থেকে বিভিন্ন সময়ে দোকান হস্তান্তরের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ২০১৭ সালে জানায়, ওই বছর দোকান হস্তান্তর না হলে পরবর্তী বছর থেকে প্রতিটি দোকানের জন্য মাসিক ৩,০০০ টাকা করে ভাড়া দেওয়া হবে। তবে তখনো নির্মাণের ৫০ শতাংশও সম্পন্ন হয়নি।
এরপর ২০২২ সালের জানুয়ারিতে কিছু দোকান মালিককে নিয়ে প্রতীকী হস্তান্তরের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়। বাস্তবে তখনো পুরো মার্কেট দৃশ্যমান ছিল না।
পরে, ২৩ জুলাই ২০২২-এ বিদ্যুৎ সংযোগ বাবদ ১,২০,০০০ টাকা দাবি করে চিঠি দেওয়া হয়, যা ২০২৫ সালের এপ্রিলের পর বাড়িয়ে ১,৫০,০০০ টাকায় উন্নীত করা হয়। সেবা চার্জের ক্ষেত্রেও রয়েছে গুরুতর অনিয়ম। নমুনা দলিলে প্রতি বর্গফুট ৫ টাকা চুক্তি থাকলেও ২০২৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে তা ৯ টাকা এবং ২০২৪ সালের ৩ জুলাই থেকে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সময়মতো পরিশোধ না করলে ১০% হারে সুদের হুমকি দেওয়া হয়, অথচ এখনো ৩য় থেকে ৭ম তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, দোকান হস্তান্তরের সময় দেওয়া নমুনা দলিল একতরফাভাবে বাতিল করে ক্রেতাদের নতুন দলিল গ্রহণে বাধ্য করার চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ। আমাদের অর্থ, সময়, স্বপ্ন—সব কিছু নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে এই কোম্পানি। প্রতারণা বন্ধ করে দ্রুত সমাধানের দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাররম হোসেন খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।