সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০১:৩২ অপরাহ্ন

ব্যস্ততা বাড়লেও এবার ক্রেতা কম চট্টগ্রামের খলিফাপট্টিতে

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম: রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫
  • ২ বার পঠিত

ঈদ সামনে রেখে চট্টগ্রামের খলিফাপট্টির সৈকত গার্মেন্টসে বেশি বানানো হচ্ছে পারসি নামের ভারতীয় পোশাকটি। এর বাইরে সেলোয়ার কামিজ, থ্রিপিসের কাজও আছে। তবে ক্রেতার চাপ অন্যবারের তুলনায় কম।

এ কারখানার শ্রমিক মো. ফাহাদ বলছিলেন, “অন্যবার অনেক রাত পর্যন্ত ক্রেতা থাকে। এবার সেটা দেখা যাচ্ছে না।”

চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা সংলগ্ন ঘাট ফরহাদবেগে এই খলিফাপট্টিতে রয়েছে ছোট ছোট কয়েকশ কারখানা। বেশিরভাগ কারখানায় এবার ভারত-পাকিস্তানের পোশাকের আদলে নিজস্ব নকশার পোশাক তৈরি হচ্ছে।খলিফাপট্টির ক্রেতা মূলত পোশাকের দোকানের ব্যবসায়ীরা। এখানকার তৈরি পোশাকগুলো চট্টগ্রামের বিপণি বিতান, পাহাড়ের তিন জেলা, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, লহ্মীপুর, চাঁদপুর, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ছোট-বড় মার্কেট ও পোশাকের দোকানে চলে যায়।সেলাইয়ের কাজে জড়িত দর্জিদের চট্টগ্রামে বলা হয় খলিফা। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর আইয়ুব আলী সওদাগর নামের এক দর্জিসহ কয়েকজন কলকাতা থেকে চট্টগ্রামে এসে ঘাটফরহাদবেগে সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন। ধীরে ধীরে ওই এলাকার নামই হয়ে যায় খলিফাপট্টি।কারখানা মালিক ও শ্রমিকদের ভাষ্য, সারা বছরের বড় ব্যবসাটা তাদের এই ঈদের সময়ই হয়। রোজা শুরুর আগে থেকেই শুরু হয় ব্যস্ততা। মানুষের ঈদের পোশাকের জোগান দিতে তারা কাজ করেন রাত জেগে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাদের কেউ করেন সেলাই, কেউ বসান জরি-পুঁতি, আবার কেউ করেন ইস্ত্রি।আবার কিছু দোকানি বাইরে থেকে পোশাক কিনে এনেও এখানে বিক্রি করেন।লিফাপট্টি ঘুরে দেখা গেল, প্রতিটি দোকানে ঈদের পোশাকের মজুদ বাড়ানো হয়েছে। প্রায় প্রতিটি দোকানে শোভা পাচ্ছে নতুন ডিজাইনের ‘পারসি’। জামার উপরের অংশে নানা ধরনের পুঁতির কাজ। নিচের অংশটি দেখতে পালাজ্জোর মত। সেখানেও রয়েছে কারুকাজ।

নূর ফ্যাশন নামের একটি দোকানের মালিক মো. সেলিম  বলেন, “এখানে মূলত পাইকারি বিক্রি হয়। চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পোশাক পাইকারি দরে কিনে নিয়ে বিক্রি করেন।”তার ভাষ্য, “বছরের অন্য সময়ের তুলনায় রোজায় বিকিকিনি ভালো হয়। তবে আগের বছরের তুলনায় এবার কম বিক্রি হচ্ছে।”এবছর ভারতীয় পারসি, গোল থ্রি পিস জামার চাহিদা বেশি জানিয়ে সেলিম বলেন, এসব জামার কাপড়ও আসে ভারত থেকে। এখানে শুধু জামাগুলো তৈরি করা হয়।

শহীদ আলম নামে এক দোকানি বললেন, একসময় নিজের কারখানায় তৈরি করা পোশাক বিক্রি করলেও এখন তিনি বাইরে থেকে কিনে এনে পাইকারিতে বিক্রি করেন।

“১০/১৫ রমজানের পর থেকেই এখানে বিকিকিনি বাড়ে। এবছর আগের মত বিক্রি হচ্ছে না। তবে আশা করছি ১৫ রোজার পর বিক্রি বাড়বে।”

সৈকত গার্মেন্টসের শ্রমিক মো. ফাহাদ বলেন, “কাজের ব্যস্ততা থাকলেও আগের বছরের তুলনায় এবার কাজ কম।”

তার সহকর্মী আবদুল মতিন জানালেন, মূলত তারা কাজ শুরু করেন সকাল ১১টার দিক থেকে। ভোরে সেহেরি খাওয়া পর্যন্ত কাজ চলে।

খলিফাপট্টিতে কাজ করেন নানা বয়সী শ্রমিক। প্রতিবছর ঈদের ব্যস্ততা ঘিরে স্থায়ী কারিগরদের পাশাপাশি কিছু ‘মৌসুমি কারিগর’ খলিফাপট্টিতে আসেন কাজ করতে।

বছরের অন্য সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় তারা কাজ করেন। তবে ঈদের আগে চাহিদা বাড়ে বলে তারা চলে আসেন বন্দরনগরীতে।

ঢাকার সাভার থেকে আসা রফিক নামে এক দর্জি বললেন, “এখানে সারা বছর কাজ কম থাকে। ওই সময়ে নিজের এলাকায় টুকিটাকি কাজ করে সংসার চলে। প্রতিবছর শবে বরাতের সপ্তাহ খানেক আগে চট্টগ্রামে আসি। ঈদের পর আবার বাড়ি ফিরে যাই।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩
themesba-lates1749691102