রাজধানীর উত্তরায় বিপ্লবী ছাত্র-জনতার সহযোগিতায় বিলাসবহুল গাড়ি থেকে বস্তাভর্তি টাকা উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আজ (বুধবার) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের একটি ভবন থেকে টাকাসহ অভিযুক্তদের আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে মাসুদ আলম নামের একজন নিজেকে প্রমিজ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পরিচয় দিলেও অপর দুইজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, দুপুর ৩টায় উত্তরার হাউজ বিল্ডিং এলাকায় শিক্ষার্থীরা সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজে নিয়োজিত থাকার সময় কালো রঙের ওই গাড়িটিকে থামার জন্য সিগন্যাল দিলে সেটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে ছাত্ররা গাড়িটিকে ঘিরে দাঁড়ালে ড্রাইভার পালিয়ে যায়। এসময় গাড়ির ভেতরে এক বস্তা টাকাসহ মাসুদ নামের ওই ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখা যায়।
ফারদিন নামের এক শিক্ষার্থী জানায়, গাড়ির সামনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টিকার থাকায় আমাদের সন্দেহ হয়। পরে তল্লাশী করে দেখি বস্তাভর্তি টাকা। গাড়িতে একটি রিভালবারও ছিল। সেটি আর পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত উত্তরা টাউন কলেজের ছাত্র তুর্য্য জানায়, টাকাগুলো লুট হয়ে যাওয়ার ভয় ছিল। তাই আমরা ছাত্ররা মিলে টাকার বস্তাসহ ওই ব্যক্তিকে আমাদের ক্যাম্পাসে এনে আটক করে সেনাবাহিনীকে খবর দিয়েছি।
এদিকে, বিকাল ৪:৫০মিনিটে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট পৌঁছালে প্রায় ঘন্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদের পর সেখান থেকে তিনজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় মাইক হাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মাহবুব ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা একটি ভালো কাজ করেছেন। এটা দেশের টাকা। টাকার মালিক কে এখনো আমি নিশ্চিত করতে পারছি না এটার (টাকার) কোন দলিল আছে কিনা। তবে উনার (অভিযুক্তদের) কথাবার্তা আমাদের কাছে অসঙ্গতি মনে হয়েছে। এজন্য উনাদেরকে আমরা টাকাসহ অ্যারেস্ট করে নিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, এই টাকা যদি অবৈধ হয়ে থাকে তবে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর আপনারা সেই বিশ্বাস রাখবেন। পরে টাকাসহ ওই তিন ব্যক্তিকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে উঠানো হয়।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সৈয়দ শাহাদাত হোসাইন জানায়, টাকার মালিক দাবী করা ব্যক্তি নিজেকে প্রমিজ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দাবী করেছেন। বস্তায় আড়াই কোটি টাকা আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। টাকাগুলো অফিসের কর্মচারীদের বেতনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে দাবী করা হয়।