সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন

সাভারে গ্রিল কেটে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, নগদ টাকাসহ স্বর্ণলঙ্কার লুট

বিশেষ প্রতিবেদক| জি.এম.টি
  • আপডেট টাইম: বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪
  • ১৪৮ বার পঠিত

সাভারের বিরুলিয়ার কৃষিবিদ এলাকার একটি বাড়িতে জানালার গ্রিল কেটে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দিবাগত রাত (১১ জুলাই) আনুমানিক আড়াইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাতদল নগদ তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা এবং ১১ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করেছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বিরুলিয়া ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামে ডাকাতি হওয়া ওই দ্বিতীয় তলা বাড়িটির চারপাশ ঘিরে রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

সাভার থানাধীন বিরুলিয়া ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের ওই বাড়ির ২য় তলায় উঠতেই চোখে পড়ে বাথরুমের পাশের একটি কক্ষের জানালার গ্রিল কাটা অবস্থায় পড়ে আছে। কক্ষটির জানালা বরাবর নিচেই দেয়ালে লাগানো রয়েছে একটি কাঠের মই। বাড়ির ২য় তলার পূর্ব পাশের অপর একটি শোবার ঘরের দরজা তালা ভাঙ্গা অবস্থায় কক্ষের মেঝেতে এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে জামা-কাপড় এবং অন্যান্য জিনিসপত্র। পাশের অন্য রুমেরও প্রায় একই অবস্থা।

বাড়ির বাসিন্দারা জানায়, গভীর রাতে মুখোশ পরা অবস্থায় ৬/৭ জন ডাকাত দলের একটি বাহিনী মিলে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে লুটপাট চালায়। এসময় বাড়ির দুই পুরুষ সদস্যকে হাত বেঁধে এবং চোখ-মুখ পেঁচিয়ে রাখে।

ডাকাতি হওয়া বাড়ির চল্লিশোর্ধ্ব নারী কল্পনা বেগম জানায়, কিছু একটার শব্দ পেয়ে ঘুম থেকে চোখ মেলতেই দেখি আমার মুখের উপর কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে চিৎকার দিতে চাইলে তারা আমাকে পিস্তল দেখিয়ে বলে যে, কোন জায়গায়  কি আছে বাইর কর, নইলে মাইরা ফালামু। এই কথাশুনে আমি ভয়ে আমার গলার, কানের স্বর্ণের জিনিসপত্র খুলে দেই। হাতে থাকা স্বর্ণের বালা খুলছিল না, তখন ওরা আমার হাত টানাটানি করছিল। পরে, আমার হাতে সাবান লাগিয়ে ওরা বালা খুলে নেয়।

ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ওই নারী আরো বলেন, ডাকাতরা আমাকে পাশের রুমে  থাকা  আমার মেয়ে আর মেয়ের জামাইকে ডাকার জন্য বলে। দরজা না খোলায় ডাকাতদের দুইজন মিলে তখন লোহার রড ঢুকিয়ে দরজার তালা ভেঙ্গে ফেলে।

ডাকাতির শিকার ওই বাড়ির মালিকের মেয়ের জামাই হামিদুর রহমান প্রতিবেদককে জানায়, রাত আনুমানিক ২টা৫০ থেকে ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে আমার রুমের দরজায় জোরে জোরে নক করছিল। কিছু বুঝতে না বুঝতেই দেখলাম দরজা ভেঙ্গে ওরা রুমে ঢুকেই আমাকে চড়-থাপ্পর দেয়া শুরু করলো। ওদের দুই-তিনজনের হাতে ছিল লোহার রড, আর একজনের হাতে ছিল পিস্তল। তখন ডাকাতদের একজন এসে আমাকে পিস্তল ঠেকিয়ে আর একজন আর একজন আমার চোখ-হাত বেঁধে ফেলে।

ভুক্তভোগী হামিদুর বলেন, এই সময়ের ভেতরেই ডাকাতরা আমার স্ত্রীর হাতে-কানে জিনিস (স্বর্ণ) ছিল, সেগুলো ওরা খুলে নেয়। আর বলতেছিল- কোন জায়গায় কি আছে তাড়াতাড়ি বাইর কইরা দে, নইলে একটাও বাঁচবি না। এই বলে ওরা সবাই ছয়-সাতজন মিলে আলমারি, শো-কেস থেকে জামা-কাপড় বের করে শুধু স্বর্ণ আর টাকা খুঁজতেছিল।

হামিদুর আরো জানায়, নগদ টাকা আর স্বর্ণ লুট করে ডাকাতরা চলে যাওয়ার সময় বাড়ির গেটের চাবি কোথায় জানতে চাইলে আমার শাশুড়ি চাবির কথা জানায়। এরপর ওরা কয়েক মিনিটের মধ্যে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার সময় আমরা চিৎকার দেই। পরে আশপাশের মানুষজন এসে আমাদের উদ্ধার করে।

গভীর রাতে ডাকাতির শিকার ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক আবুল কালাম বাবুল প্রতিবেদককে জানায়, ডাকাতরা ছিল ৬ থেকে ৭জন। আমার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলার পর আমি আর কিছুই জানিনা। শুধু আওয়াজের শব্দ শুনছিলাম। ওরা চলে যাওয়ার পর আমরা ৯৯৯-এ ফোন দিলে ভোর ৬টার দিকে পুলিশ আসে।

এদিকে, গভীর রাতে ওই বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শহীদুল ইসলাম বলেন, কৃষিবীদের ওইদিকে একটি বাড়িতে এরকম (ডাকাতি) একটা ঘটনা ঘটেছে। আমরা আসলে সবাই কোটা আন্দোলনের ইস্যুতে রাস্তায় আছি। ওখানে (ডাকাতির স্থানে) আমাদের বিকল্প একটি টিম আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩
themesba-lates1749691102