রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি পশুর হাটে গরু পরিবহণে নিয়োজিত থাকা পিকআপ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে নগদ টাকাসহ হাতেনাতে তিন চাঁদাবাজকে আটক করেছে তুরাগ থানা পুলিশ। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তুরাগ থানাধীন দিয়াবাড়ি গরুর হাটের ১নম্বর হাসিল ঘরের পাশ থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটক ওই তিন চাঁদাবাজকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে মর্মে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শেখ সাদি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, হাটে ক্রেতাদের গরু বাসাবাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন পিকআপ ও মিনি ট্রাক থেকে পিকআপ প্রতি চার হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছিলেন তারা। এ নিয়ে কয়েকজন পিকআপ ড্রাইভার বিষয়টি হাটে দায়িত্বরত পুলিশ টিমকে জানালে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা চাঁদাবাজচক্রের ওই তিনজনকে টাকাসহ হাতেনাতে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী সজল নামের এক পিকআপ চালক জানান, হাটের ভিতরেই ঢুকলেই টোকেন নিতে হয়। আমার পাঁচটা গাড়ির জন্য টোকেন নিছি। প্রতি টোকেন চার হাজার টাকা করে। ১ নম্বর কাউন্টার থেকে টোকেন দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক পিকআপ মালিক জানায়, এটা আমাদের উপর একটা জুলুম। আমরা সারাদিন গায়েগতরে খাটি। ট্রিপ না হইলেও ওরা আমাদের কাছ থেকে চার হাজার টাকা করে নিছে।
সূত্র জানায়, চাঁদাবাজরা ইজারাদারের লোক পরিচয়ে টাকা উঠাচ্ছিল। তারা হাটে আসা প্রায় চার থেকে পাঁচশ পিকআপ থেকে অবৈধ টোকেনের মাধ্যমে ৪ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। পুলিশ তাদেরকে হাতেনাতে ধরার পর চাঁদাবাজদের কাছ থেকে নগদ টাকা উদ্ধার করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দিয়াবাড়ি গরুর হাটের পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পে টাকা ফেরত দেওয়ার নিমিত্তে লাইনে দাঁড় করিয়ে টোকেনের ভিত্তিতে পিকআপ ড্রাইভারদের নাম-তালিকা করছে পুলিশ।
রাতে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পে টোকেন জমা দিয়ে নাম-পরিচয় প্রদানকারী এক ড্রাইভার জানায়, পুলিশ বলল তো টাকা পাব। নাম, মোবাইল, গাড়ির নম্বর রাখছে পুলিশ।
এদিকে, হাটে গরু পরিবহণে যুক্ত থাকা পিকআপ থেকে চাঁদা আদায়ে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে দিয়াবাড়ি পশুর হাটের ইজারাদার কফিল উদ্দিন মোবাইল ফোনে বলেন, এটা ভাই সম্পূর্ণরূপেই ভুয়া। কে বা কারা এই কাজ করছে আমি জানি না। আচ্ছা পরে কথা বলি আমি এখন ঝামেলায় আছি। এই বলে প্রতিবেদকের কল কেটে দেন তিনি।
এদিকে, পশুর হাটে পিকআপ থেকে চাঁদা আদায়ে জড়িত ওই তিনজনের বিষয়ে জানতে চাইলে তুরাগ থানার অফিসার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শেখ সাদি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। যদি ঘটনার সত্যতা পাই তাহলে আমরা আপনাদের বিস্তারিত জানাব।
অপরদিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে পিকআপ ড্রাইভারদের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
সূত্র: যুগান্তর।