এ সময় পাশে বসা কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘শুনেছি ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। আর এবার নির্বাচনে কী দেখলাম? দেশের চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে নিজে বড়, আর নিজের চাইতে স্ত্রী বড়। এভাবে কোনো দল চলতে পারে না।’
আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘রওশন এরশাদের নেতৃত্বে পচা মাংস ফেলে দিয়ে নতুন জাতীয় পার্টি তৈরি করা হবে।’
এরশাদের জীবদ্দশা থেকেই দ্বন্দ্ব চলছে রওশন এরশাদ ও তাঁর দেবর জি এম কাদেরের। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে তা চরমে পৌঁছে। নেতৃত্বের লড়াইয়ে টিকতে না পেরে নির্বাচনে অংশই নেননি গত দুই সংসদের বিরোধী দলের নেতা রওশন। তাঁর অনুসারীদের কাউকেই এবার মনোনয়ন দেয়নি জাপা। জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাপা মাত্র ১১টি আসন পাওয়ায় দলের মধ্যে ব্যাপক হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর ভোটে যাওয়া এবং প্রার্থীদের খোঁজখবর না নেওয়ার বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে রওশান ‘সম্মেলন বাস্তবায়ন’ কমিটির আহ্বায়ক করেন কাজী ফিরোজকে। আবু হোসেন বাবলাকে কো-আহ্বায়ক, গোলাম সরোয়ার মিলনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, শফিকুল ইসলামকে সদস্যসচিব এবং জিয়াউল হক মৃধাকে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এদিকে জাপায় বলাবলি হচ্ছে, স্ত্রী সালমা হোসেনকে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন না দেওয়ায়ই রাতারাতি পক্ষ বদল করেছেন আবু হোসেন বাবলা। তবে নিজ আসনে সমঝোতা না হওয়ায় তিনি আগে থেকেই জি এম কাদেরের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। ঢাকা-৪ আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য বাবলা এবার ভোটে হয়েছেন তৃতীয়।
বাবলার পক্ষবদলকে অবশ্য আমলে নিতে চাচ্ছেন না মুজিবুল হক চুন্নু। রওশনের সংবাদ সম্মেলনের পর গতকাল দুপুরে বনানী কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনি যেহেতু মূল দলের সঙ্গে থাকতে চান না, অন্য দলের সঙ্গে যেতে চান, তাই পদত্যাগ করলেই ভালো করতেন। যেহেতু অন্য আরেকটি দলে যাওয়ার চেষ্টা করা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ, তাই তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছেন চেয়ারম্যান।’
২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাপার বর্তমান কমিটির মেয়াদ ফুরিয়েছে। কবে সম্মেলন হবে—এ প্রশ্নে চুন্নু বলেন, ‘সম্মেলন নিয়ে সাংবাদিকরা এত উতলা কেন? বলেছি তো, সময় হলেই সম্মেলন করব। এই বছরের মধ্যেই করব।’