শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৩ অপরাহ্ন

বাবার হাত ধরে বাসায় ফেরা হলো না শিশু ইয়াসিনের

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম: বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৬৮ বার পঠিত
রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় পাজোরো গাড়িচাপায় শিশুসহ তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার পরপরই পালিয়ে যাওয়া গাড়িটির চালক মোহাম্মদ নাবিলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আহত সুমনের (৩৫) অবস্থা ভালো নয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা চলছে।

দুর্ঘটনায় তার দুই পা ভেঙে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডের গিয়ে দেখা যায়, ডান হাত বাহু থেকে কব্জি পর্যন্ত ব্যান্ডেজ করা। দুই পা ভেঙে যাওয়ার কারণে টান দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। সেখানে পরিবারের সদস্যরা বলছিলেন।

তারা আরো বলেন, খিলক্ষেতের সড়কে বাসের জন্য অপেক্ষার সময় ইয়াসিনকে কেড়ে নেয় বেপরোয়া গতির ল্যান্ডক্রুজার পাজেরো গাড়িটি। পরে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে নেওয়া হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।

ঢাকা মেডিক্যালে গিয়ে যখন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয় তখন আহত সুমন বলতে থাকেন, ছেলে (ইয়াসিন) আমার বাম হাত ধরেছিল। ডান হাতে ছিল দাদার দেওয়া জুস। রাস্তার পাশে ফুটপাতের সাইডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম আমরা। তারপর কী হলো আর বলতে পারছি না।

এ সময় পাশে থাকা সুমনের বাবা ও স্বজনরা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চষ্টো করতে থাকেন। তারা জানান, শিশু ইয়াসিন মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করত।

এ সময় ছেলের কাছ থেকে সড়ে গিয়ে নাতির শোকে আবেগ তাড়িত হয়ে মো. মফিজ বলেন, খিলক্ষেত এলাকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করি আমি। গত রাতে খাবার নিয়ে আমার ছেলে ও নাতি আমাকে দেখতে গিয়েছিল। এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে তিনি বলেন, মাস শেষ বলে আমার পকেটে টাকা ছিল না। তাই দোকান থেকে বাকিতে ১০ টাকা দামের পাঁচটা জুস আমার নাতি ইয়াসিনকে দেই। দুইটা চিপসও কিনে দিয়েছিলাম। আমার ছেলে ও নাতি চিপস খেয়েছে বলে তিনি আহাজারি করতে থাকেন।

ঢাকা মেডিক্যালের ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিত্সক জানান, সুমনের অবস্থা অনেক খারাপ। তার দুই পায়ে ও হাতে গুরুতর যখম হয়েছে। আইসিইউতেও নেওয়া লাগতে পারে তাকে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে খিলক্ষেত বাজার যাত্রী ছাউনি সংলগ্ন প্রধান সড়কে বেপরোয়া গতির একটি পাজেরো গাড়ি চাপা দেয় শিশুসহ চারজনকে। একই ঘটনায় গত রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান উজ্জ্বল পান্ডে (২৬) ও আমরিনা (২৭) নামে আরো দুজন।

খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আমিনুল বাশার বলেন, যতটুকু জানা গেছে পাজোরো (ল্যান্ডক্রুজার) গাড়িটির মালিক একজন নারী। তার নামে রেজিস্ট্রেশন আছে গাড়িটির। এই ঘটনায় মারা যাওয়া শিশু ইয়াসিন, আমরিনা ও উজ্জ্বল পান্ডের পরিবারের আলাদা আবেদনের কারণে ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ তিনটি হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩
themesba-lates1749691102