জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের এক কোটি ৩৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি জানায়, বর্তমানে বিশ্বে প্রতি আটজনে একজন এবং এক বিলিয়ন লোকের মধ্যে ২৮১ মিলিয়ন অভিবাসী; আর কয়েক মিলিয়ন ব্যক্তি রাষ্ট্রহীন।
ডব্লিউএইচও প্রতিনিধিরা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, দ্বন্দ্ব, বাণিজ্য ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি মানুষের বাস্তুচ্যুত ও অভিবাসন সমস্যা বৃদ্ধি করেছে। ১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশ তিনটি বড় ধরনের অভিবাসী সমস্যা প্রত্যক্ষ করেছে, যেখানে মিয়ানমারের নাগরিকদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, যাদের প্রত্যেকের উপযুক্ত চিকিৎসা ও বসবাসের ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে।
শরণার্থী ও অভিবাসী স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো ভালোভাবে মোকাবিলা, পেশাদার দক্ষতা ও সক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য দেশ ও অঞ্চলগুলোকে সহায়তার লক্ষ্যে চার দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রিয়াসুস জানিয়েছেন, অভিবাসন ও বাস্তুচ্যুতি মানুষের শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার ওপর গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পার্থক্য, আর্থিক বাধা, কুসংস্কার, বৈষম্য সবই উদ্বাস্তু ও অভিবাসীদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের এই বাধাগুলো অতিক্রমে সাহায্য করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে? শরণার্থী গ্লোবাল স্কুলের মাধ্যমে শরণার্থী এবং অভিবাসীদের আরও ভালো সেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা তৈরি করাও একটি লক্ষ্য।
ডব্লিউএইচও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, স্বাস্থ্যের অধিকার এমন একটি অধিকার যা সর্বত্র সব মানুষের, বিশেষ করে উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের জন্য প্রসারিত। কারণ সত্যিকার অর্থে সম্মানিত, সুরক্ষিত ও পরিপূর্ণ হতে হলে স্বাস্থ্যসেবার অধিকারে অবশ্যই প্রান্তিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ শুধু তাদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার অ্যাক্সেসই দেয়নি, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনও দিয়েছে। এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং আইনি দুর্বলতাগুলো মোকাবিলার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টাও করেছে।