দেশে প্রতিবছর ৪০ হাজার মানুষের কিডনি বিকল হচ্ছে। এর ৭৫ শতাংশই মারা যায় ডায়ালিসিস ও কিডনি প্রতিস্থাপন করতে না পেরে। প্রতিবছর কিডনি বিকল হয়ে অর্ধলক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। গতকাল শনিবার কিডনি ফাউন্ডেশনের ১৮তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান ফাউন্ডেশনটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ।
ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, বিশ্বে ১০ থেকে ১২ শতাংশ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনির রোগে ভুগে থাকে। অর্থাৎ ৮৫ কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে এ রোগে আক্রান্ত। দেশে বর্তমানে দুই কোটির বেশি লোক কোনো না কোনো কিডনির রোগে ভুগছে। এসব রোগীর মধ্যে ৪০ হাজার রোগীর প্রতিবছর কিডনি বিকল হয়। এদের ৭৫ শতাংশই মারা যায় ডায়ালিসিস বা কিডনি সংযোজনের চিকিৎসার অভাবে। হঠাৎ করে কিডনি বিকল হয়েও প্রতিবছর আরো ২০ হাজার রোগীর মৃত্যু ঘটে।
তিনি বলেন, দেশে কিডনির রোগের প্রধান কারণ হিসেবে রয়েছে নেফ্রাইটিস বা প্রস্রাবে প্রোটিন নির্গত হওয়া, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। এ ছাড়া প্রস্রাবে সংক্রমণ, পাথরজনিত রোগ, জন্মগত কিডনির রোগ, ওষুধজনিত কিডনির রোগ, ভেজাল খাদ্য, পলিসিস্টিক কিডনির রোগ অন্যতম।
ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, কিডনির রোগের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনির রোগে আক্রান্ত মানুষের হার সবচেয়ে বেশি এবং পুরুষের তুলনায় নারীরা কিডনির রোগে বেশি ভুগে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব রোগী অপুষ্টিতে ভোগে, তারা ডায়ালিসিস শুরু করার পর বেশিদিন ভালো থাকতে পারে না।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের প্রথম দিন বিদেশি অতিথিদের মধ্যে অংশ নেন ইউকে রয়াল লন্ডন হাসপাতালের অধ্যাপক মুহাম্মদ মাগদি ইয়াকুব, ভারতের উমাকান্ত প্রস্টি, যুক্তরাজ্যের ডা. স্ট্যানলি ফ্যান, নেপালের ডা. ক্লারা পাউডেল ও অধ্যাপক সঞ্জীব কুমার শর্মা এবং মেডিক্যাল এডুকেশন বার্টস হেলথ এনএইচএস ট্রাস্টের পরিচালক ডা. ক্যাথরিন বেনেট রিচার্ড।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য ডা. মো. শরফুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাংলাদেশে কিডনির রোগ ও কিডনি অকেজো রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুটি কিডনি অকেজো হয়ে গেলে রোগীকে বেঁচে থাকার জন্য ডায়ালিসিস অথবা কিডনি সংযোজন করতে হয়। বাংলাদেশে এ দুটি চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এই চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল এবং সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।