ময়মনসিংহের রাজাকার রেজাউল করিমসহ আটজনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে সুনির্দিষ্ট আটটি অভিযোগ গতকাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমার চার্জ) দাখিল করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে গতকাল এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজাদ। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়।
এই ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন হত্যা, গণহত্যা, আটক, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিরা হচ্ছেনÑ রেজাউল করিম ওরফে আক্কাস মৌলভী (৬৫), এ বি এম ইউনুস আলী (৬৫), তার ছোট ভাই মো: ইউসুফ আলী ওরফে এ কে এম ইউসুফ আলম (৬০), মো: ওমর ফারুক (৭০), নাসির উদ্দিন (৬৪), ইসমাইল হোসেন (৬৫), এ কে এম বেলায়েত হোসেন ৬৪) ও কাজী বদরুজ্জামান (৬৫)।
আসামিদের মধ্যে চারজন গ্রেফতার রয়েছেন গ্রেফতারকৃতরা হলেনÑ রজাউল করিম ওরফে আক্কাস মৌলভী, এ বি এম ইউনুস আলী, তার ছোট ভাই মো: ইউসুফ আলী ওরফে এ কে এম ইউসুফ আলম ও ওমর ফারুক।
৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল
এপিআই শিল্পপার্কে প্লট বরাদ্দ অক্টোবরের মধ্যেই
আগামী অক্টোবরের মধ্যেই মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ওষুধ শিল্পনগরী অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) শিল্পপার্কে প্লট বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, ‘এপিআই শিল্পপার্কের ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী অক্টোবরের মধ্যেই প্লট বরাদ্দ দেয়া হবে। এর পরপরই শিল্প নগরীতে ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনের কারখানা স্থাপন শুরু হবে।’
এপিআই শিল্পপার্কে উৎপাদন শুরু হলে ওষুধ শিল্পের কাঁচামালখাতে আমদানি খরচ ৭০ শতাংশ কমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রোববার শিল্প মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) আওতায় বাস্তবায়নাধীন ওষুধ শিল্পনগরী প্রকল্পের (এপিআই শিল্প পার্ক) অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা শেষে শিল্পমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির প্রতিনিধিদলের সাথে এ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বিসিকের চেয়ারম্যান মুস্তাক হাসান মোহাম্মদ ইফতেখার, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সফিউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ওষুধ শিল্পনগরীর কার্যক্রম দ্রুত চালুর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় শিল্পনগরীতে ৪২টি শিল্প ইউনিটের অনুকূলে প্লট বরাদ্দ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একইসাথে শিল্প উদ্যোক্তাদের নিজস্ব অর্থায়নে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ওষুধ শিল্প বাংলাদেশে একটি উদীয়মান শিল্পখাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৩৩টি দেশে রফতানি হচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পেটেন্টেড ওষুধ উৎপাদনের জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) থেকে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ছাড় পেয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে তিনি দ্রুত এপিআই শিল্পপার্কে কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসতে উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানান।
এপিআই শিল্পপার্ক চালু হলে ওষুধ শিল্পখাতে আমদানি ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি রফতানি আয় বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বৈঠকে ওষুধ শিল্প উদ্যোক্তারা বরাদ্দ প্রাপ্ত প্লটের বিপরীতে মূল্য পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি এবং সার্ভিস চার্জ কমানোর জন্য শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
জবাবে শিল্পমন্ত্রী বরাদ্দকৃত প্লটের মূল্য পরিশোধের সময়সীমা পাঁচ বছরের পরিবর্তে ১০ বছর এবং বিসিক নির্ধারিত সার্ভিস চার্জ শতকরা ২০ ভাগ থেকে কমিয়ে শতকরা সাড়ে ১২ ভাগ নির্ধারণের ঘোষণা দেন।
প্লটের মূল্য পরিশোধের সময়সীমা পাঁচ বছরের পরিবর্তে ১০ বছরে নির্ধারণ করায় ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সফিউদ্দিন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার ওষুধ উৎপাদন হচ্ছে। এ উৎপাদন থেকে অভ্যন্তরীণ চাহিদার শতকরা ৯৭ ভাগ মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা আজ যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন
পলাতক আসামি এমপি আমানুরের আত্মসমর্পণ
আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার পলাতক আসামি সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা টাঙ্গাইল আদালতে হাজির হয়েছেন। রবিবার সকালে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে হাজির হন। আদালত পুলিশের পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আদালতে হাজির হয়ে তিনি জামিনের আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে শুনানি চলছে। ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ টাঙ্গাইলে তার কলেজপাড়ার বাসার সামনে পাওয়া যায়। এর তিন দিন পর তার স্ত্রী টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী নূর চৌধুরীর বহিঃসমর্পণের বিষয়ে ঢাকা ও অটোয়ার মতৈক্য
আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনী নূর চৌধুরীর বহিঃসমর্পণের উপায় বের করার বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ও কানাডা । বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত নূর চৌধুরী কানাডায় পালিয়ে রয়েছেন। শুক্রবার হায়াত রিজেন্সি মন্ট্রিয়েলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ ব্যাপারে মতৈক্য হয়।
বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোঃ শহিদুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম সংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দু’দেশের কর্মকর্তারা বৈঠকে মিলিত হয়ে নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে বহিঃসমর্পণের উপায় বের করবেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আলোচনার লক্ষ্য হবে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকরের জন্য নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনা।’
হক বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার বহিঃসমর্পণের ব্যাপারে দু’দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার মধ্যদিয়ে একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ইস্যুকে দুই নেতা একটি ‘বৈশ্বিক সমস্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তারা বলেছেন, একসাথে কাজ করার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জঙ্গি বিরোধী অবস্থান এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি আরো বলেন, দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ ও গার্মেন্টস পণ্যের রপ্তানীর মতো অন্যান্য বিষয়ে নিয়েও আলোচনা করেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সফরের জন্য জাস্টিন ট্রুডোকে আমন্ত্রণ জানান। কানাডার প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকতার সঙ্গে তাঁর এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
এ ব্যাপারে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ১২ বছর বয়সে তার পিতা ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে এলিওট ট্র্র্রুডোর সঙ্গে বাংলাদেশ সফর করেন।
ট্রুডো শেখ হাসিনাকে বলেন, তিনি শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন। তার ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সফরকালীন বেশকিছু অস্পষ্ট স্মৃতি রয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ৩০ বছর পর এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী কানাডা সফর করছেন।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে একটি নতুন মাত্রা যোগ হলো।
টঙ্গীতে টাম্পাকো শ্রমিকদের মানববন্ধন
টঙ্গীতে টাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় অগ্নিকান্ডের জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে দায়ি করে আজ শনিবার সকালে টঙ্গীতে মানববন্ধন করেছেন কারখানার শ্রমিক-কর্মচারিরা। তারা এসময় কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও টাম্পাকোকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
টঙ্গী-ঘোড়াশাল সড়কের আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতুর নীচে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এই মানববন্ধন।
মনববন্ধনে ‘টাম্পাকো পুড়লো কেন তিতাস গ্যাস জবাব চাই’ ‘ টাম্পাকো পরিবার বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাই’ ‘টাম্পাকো বাঁচলে টাম্পাকো পরিবার বাঁচবে’ ‘সুখে ছিলাম, এখন দু:খে আছি আমরা টাম্পাকোকে ভালবাসি’ ‘টাম্পাকোর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই করতে হবে’ ইত্যাদি নানা স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ফ্যাষ্টুন নিয়ে কারখানার শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারি মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অপারেটর জাকির হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, লিটন, মজিবুর রহমান, আব্দুর রহিম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মালিকের কোন গাফিলতি বা দোষ নেই। মামলা প্রত্যাহার হলে মালিক কারখানায় আসতে পারবেন। আমাদের খোঁজ খবর নিতে পারবেন। কারখানাটি পুনরায় চালুর ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
খুব শিগগির সুন্দরবনে জলদস্যুদের রাজত্বের অবসান হবে
সুন্দরবনে খুব শিগগির জলদস্যুদের রাজত্বের অবসান হবে। জলদস্যু বাহিনীর অধিকাংশ সদস্য ইতোমধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ গ্রেফতার কিংবা আত্মসমর্পণ করেছে। আরো অনেকেই সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৮ এর অপারেশন অফিসার পুলিশের এএসপি মো. নিজামউদ্দিন বলেন, ‘দস্যুদের ২০টি বাহিনী সুন্দরবন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতো। বর্তমানে মাত্র চারটি বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতায় বাকী ১৬টি বাহিনী তাদের কর্মকা- বন্ধ করে দিয়েছে।’ ‘কয়েকটি বাহিনী আত্মসমর্পণের পাইপলাইনে রয়েছে’- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে চারটি অখ্যাত বাহিনীর মধ্যে ‘জাহাঙ্গীর বাহিনী’ সুন্দরবন এলাকায় সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড খুলনা, শরণখোলা ও মংলা রেঞ্জে সীমাবদ্ধ রয়েছে।’ র্যাবের অভিযানে শুরু থেকে এ পর্যন্ত সুন্দরবন এলাকায় পাঁচটি বাহিনীর আত্মসমর্পণসহ মোট ১৯৯ জন জলদস্যুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এতে ৬১২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৬ হাজার ৪৫১ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়েছে। বর্তমানে জলদস্যুদের জেলে নৌকায় ডাকাতি, মুক্তিপণের জন্য জেলেদের অপহরণ, ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে টোল আদায়সহ তাদের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। সুন্দরবন থেকে জলদস্যু নির্মূল করার লক্ষ্যে র্যাব, পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর সমন্বয়ে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। সরকার পুনরায় সুন্দরবন এলাকার চার জলদস্যু বাহিনীকে আইন-শৃংখলা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেছে, অন্যথায় তাদের কাউকেই রেহাই দেয়া হবে না। এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে দুই বাহিনী ‘শান্ত বাহিনী’ ও ‘আলম বাহিনী’র ১৪ জন ডাকাত আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে শান্ত বাহিনীর প্রধান মো. বারেক তালুকদার শান্ত (৪৮)-সহ তার বাহিনীর ১০ জন এবং আলম বাহিনীর প্রধান মো. আলম সরদারসহ (৩৪) চার সদস্যের আত্মসমর্পণকে স্বাগত জানান। বাকী জলদস্যুরাও খুব শিগগির আত্মসমর্পণ করবে বলে আশা প্রকাশ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, তারা এর মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে প্রবেশ করতে পারবে। তিনি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলকে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। ওই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে দস্যুরা ৯টি বিদেশি ওয়ান ব্যারেল পিস্তল, বিদেশি দু’টি দুই ব্যারেল পিস্তল, দু’টি কাটা রাইফেল, ৫টি পয়েন্ট ২২ বোর বিদেশি এয়ার রাইফেলসহ ২০টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১৮শ’ রাউন্ড বিভিন্ন প্রকারের গুলি জমা দেয়। শান্ত বাহিনীর আত্মসমর্পণকৃত দস্যুরা হলেন: মনির হাওলাদার (৪৫), দুলাল মোল্লা ভান্ডারি (৪০), ফরিদ হাওলাদার (২৬), আনিসুর রহমান মোল্লা (৩৫), বশির আহমেদ শেখ (৪৭), ফরিদ গাজী (৩৮), মোস্তফা শেখ (৪৬), নূরুল ইসলাম (৪৪) ও খোরশেদ শেখ (৫২)। আলম বাহিনী থেকে আত্মসমর্পণ করেন হালিম গাজী (২৬), আবু বকর সিদ্দিক (২৭) ও মো. আসাদুজ্জামান (১৮)। তারও আগে গত ৩১ মে ও ১৪ জুলাই যথাক্রমে মাস্টার বাহিনীর ১০ জন এবং মঞ্জু ও ইলিয়াস বাহিনীর ১১ দস্যু আত্মসমর্পণ করে। এসময় মাস্টার বাহিনী ৫২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও সাড়ে ৪ হাজার রাউন্ড গুলি এবং মঞ্জু ও ইলিয়াস বাহিনী ২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ২০ রাউন্ড গুলি জমা দেয়।
মেগা প্রকল্পগুলোর ব্যয় বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে
প্রকল্প ব্যয়ের অগ্রগতি যতটা, বাস্তব অগ্রগতি তার ধারে কাছেও নেই। ব্যয় টেনে ধরার কোনো লাগাম নেই। ফলে ব্যয় বেড়েই চলছে। গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো কয়েক দফা সংশোধন নিয়েই এখন চলমান। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনোটাই শেষ করতে পারেনি। কোনো কোনোটি আবার বিশেষ সংশোধনও করিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে তিনটির ব্যয় বেড়েছে তিন হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। মেয়াদকাল গড়ে তিন বছর করে বাড়ানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের তথ্যানুযায়ী, তাদের অধীনে বাস্তবায়নাধীন ছ’টি মেগা প্রকল্পের মধ্যে তিনটির ব্যয় বেড়েছে তিন হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। অথচ প্রকল্পগুলোতে কাক্সিত অগ্রগ্রতি নেই। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন প্রকল্প, জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প, কাঁচপুর-মেঘনা-গোমতি দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ, সেতু পুনর্বাসন, জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়ক চার লেন প্রকল্প এবং গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পÑ এই ছয় প্রকল্পের অনুমোদিত ব্যয় হলো ৩৮ হাজার ৩৭০ কোটি ৯২ লাখ ২২ হাজার টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যয় হলো মেট্রোরেল প্রকল্পে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা।
এই ছয় প্রকল্পের মধ্যে তিন প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে অনেক বেশি। সময় বাড়ানোর কারণেই ব্যয় বাড়ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে এক হাজার ৬৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল দুই হাজার ১৬৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ২০১২ সালে শেষ করার কথা থাকলেও আজো চলছে প্রকল্পটি। ইতোমধ্যে তিনবার সংশোধন করে সময় ও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সড়কের অগ্রগতি ৯০.০৪ শতাংশ, সেতুর ৯৭ শতাংশ দেখানো হয়েছে।
২০১০ সালে ৯০২ কোটি ২২ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়, যা শেষ করার সময় নির্ধারণ ছিল ২০১৩ সাল। কিন্তু আজো তা চলছে। এখন সমাপ্তির বছর ২০১৭ ধরা হয়েছে। আর ব্যয় তিনবার সংশোধন করে ৯১২ কোটি ৮৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। সাসেক জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়ক চার লেন প্রকল্পটিও একই রোগে আক্রান্ত। ২০ কিলোমিটার সড়কের এই প্রকল্পের কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। অথচ প্রকল্পটি ১৩ সালে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০১৮ সালে শেষ করার কথা। ইতোমধ্যে প্রকল্পটি দু’বার সংশোধন করে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। দুই হাজার ৪৮৮ কোটি ৪৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকার প্রকল্পটির ব্যয় এখন তিন হাজার ৩৬৪ কোটি ৭৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখানে ব্যয় বেড়েছে ৫৭৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
আইএমইডি বলছে, সঠিক সময়ে প্রকল্প অনুমোদন দেয়ার পরও সময় মতো কাজ শুরু না করার কারণে প্রকল্পের কাজ পিছিয়ে যায়। ফলে ব্যয় বাড়ছে। প্রকল্পগুলো বছরের পর বছর এডিপিতে টানতে হচ্ছে। সড়ক খাতের প্রকল্প এমনো রয়েছে যেগুলো ১০-১২ বছর ধরে চলছেই। কোনোভাবেই এর সমাপ্তি হচ্ছে না। যেমন গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি ২০০৬ সালে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। এখনো ব্যয় বাড়িয়ে সেটাকে অব্যাহত রাখা হয়েছে।
“বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মানন” ট্রুডোর ছেলের হাতে তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাবা পিয়েরে ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ও অসামান্য অবদান রাখায় 'ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার' মরণোত্তর পুরস্কার ছেলে জাস্টিন ট্রুডোর হাতে তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১২ সালে পিয়েরে ইলিয়ট ট্রুডোকে মরণোত্তর 'বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা'য় ভূষিত করা হয়। তাঁর প্রতি সম্মান জানাতে দীর্ঘদিন পর এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ট্রিয়লের হায়াত রিজেন্সিতে পঞ্চম বৈশ্বিক তহবিল পুনর্গঠন সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিকেলে একই হোটেলে অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে সম্মেলনের মিনিস্ট্রিয়াল প্লেজিং মোমেন্টের আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনায় অংশ নেন তিনি। যোগদানের জন্য বর্তমানে উত্তর আমেরিকার কানাডায় সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী। হায়াত রিজেন্সি মন্ট্রিয়লে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আমন্ত্রণে আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ কানাডার প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ব তহবিলের নির্বাহী পরিচালক মার্ক দাইবালের সঙ্গে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় দিনের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। একই দিনে 'রিমোভিং বেরিয়ার্স টু হেলথ থ্রো এম্পাওয়ারিং উইমেন অ্যান্ড গার্লস অ্যান্ড রিচিং দ্য মোস্ট মার্জিনালাইজড' শীর্ষক প্যানেল আলোচনা ১ ও 'এনগেজিং অ্যান্ড মোবিলাইজিং ইয়ুথ টু মিট দ্য সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস' শীর্ষক প্যানেল আলোচনা ২ এ অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- 1
- 2
- 3
- 4
- 5
- 6
- 7
- 8
- 9
- 10
- 11
- 12
- 13
- 14
- 15
- 16
- 17
- 18
- 19
- 20
- 21
- 22
- 23
- 24
- 25
- 26
- 27
- 28
- 29
- 30
- 31
- 32
- 33
- 34
- 35
- 36
- 37
- 38
- 39
- 40
- 41
- 42
- 43
- 44
- 45
- 46
- 47
- 48
- 49
- 50
- 51
- 52
- 53
- 54
- 55
- 56
- 57
- 58
- 59
- 60
- 61
- 62
- 63
- 64
- 65
- 66
- 67
- 68
- 69
- 70
- 71
- 72
- 73
- 74
- 75
- 76
- 77
- 78
- 79
- 80
- 81
- 82
- 83
- 84
- 85
- 86
- 87
- 88
- 89
- 90
- 91
- 92
- 93
- 94
- 95
- 96
- 97
- 98
- 99
- 100
- 101
- 102
- 103
- 104
- 105
- 106
- 107
- 108
- 109
- 110