জঙ্গি ইস্যুতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়: শিক্ষামন্ত্রী
জঙ্গি ইস্যুতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
মঙ্গলবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর করণীয় সম্পর্কে আলোচনার লক্ষ্যে শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সম্প্রতি জঙ্গি হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এসেছে। এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র-শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থী জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত রয়েছে- এমন কথা প্রচারের পরও কর্তৃপক্ষ বিষয়টির ওপর নজর রাখে না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যাপারে আগে থেকে সচেতন আছি।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে আগেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, একজন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে, শোকজের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ইউনভার্সিটি ছেড়ে চলে গেছেন। অনেক দিন সেখানে ট্রাস্টি বোর্ডের কমিটিকে স্থগিত রেখেছি। সেখানকার প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ না করা পর্যন্ত আমরা তাদেরকে কনভোকেশন করতে দিইনি। রাষ্ট্রপতি যাবেন, সেটা অনুমোদন করিনি। যার ফলে তাদের অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এখন জঙ্গিবাদের বিষয়টা যেভাবে এসেছে, তখন সেভাবে আসেনি। পরিস্থিতির ভিন্নতায় ভিন্নভাবে মোকাবিলা করছি।’
কোনো শিক্ষার্থী টানা এক সেমিস্টার অনুপস্থিত থাকলে ছাত্রত্ব হারাবেন বলে গত ১০ জুলাই এক জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রত্ব ধরে রাখতে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি যে বিধিনিষেধ বেঁধে দিয়েছে, তা পাশ কাটিয়ে চলে গেছে। ছাত্রত্ব বাতিলের জন্য এটা একাডেমিক সিদ্ধান্ত হতে পারে, কিন্তু জঙ্গিপন্থা প্রতিরোধের জন্য এটা মোটেও কার্যকরী পদক্ষেপ না। এক সেমিস্টারে অনুপস্থিত থাকলে অপকর্ম করে ফিরে আসতে পারে।’
বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতি সন্দেহ আছে বলেও জানান মন্ত্রী। মূল বিষয়কে অ্যাড্রেস করার জন্য এটা যথেষ্ট নয়।
নর্থ সাউথের এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টানা ১০ দিনের বেশি অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানোর নির্দেশ দেয়।
যারা অনেক বেশি ধনী বা আর্থিকভাবে সচ্ছল, তাদের দিকে দৃষ্টি পড়ছে মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, স্কলাস্টিকাও স্বীকার করেছে। এ জন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরো বেশি নজরদারি করতে হবে।
নাহিদ বলেন, ‘শিক্ষক-অভিভাবকদের বলব, কোনো শিক্ষার্থীর মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ করলে তাকে সতর্কতার সঙ্গে দেখবেন, কোনো সন্দেহজনক আচরণ করলে রিপোর্ট করবেন।’