বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রী রহিমা বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় স্বামী সুমন মুন্সির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল। একই সাথে তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রবিবার বিকেলে আসামী সুমনের উপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ মো. আবু তাহের এই দণ্ডাদেশ দেন। রায় ঘোষণার পরপরই সুমনকে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সুমন তালুকদার চর গ্রামের আবুল মুন্সির ছেলে। নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ফয়জুল হক ফয়েজ জানান, ২০১৩ সালে বরিশাল সদর উপজেলার ডিঙ্গামানিক গ্রামের মো. আনিচ হালাদারের মেয়ে মোসাম্মত রহিমাকে সামাজিকভাবে বিয়ে করে সুমন মুন্সি। বিয়ের দেড় বছর পর তাদের দাম্পত্যে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
২০১৫ সালের ২০জুন নিজ ঘরে রাতের খাবার শেষে স্ত্রীকে তার পিত্রালয় থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য ফের চাপ দেয় সুমন। এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। এ ঘটনায় সুমন সহ তার পরিবারের ৪ সদস্যকে আসামী করে পরদিন মেহেন্দিগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন রাহিমার বাবা মো. আনিচ হাওলাদার। ২২ জুন সুমনকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। পরে সে আদালতে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এতে সে উল্লেখ করে, ২০১৫ সালের ২০ জুন রাতের খাবার শেষে ব্যবসা করার জন্য স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ি থেকে ১৫ হাজার টাকা এনে দিতে বলেছিলেন তিনি।
এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে স্ত্রী রাহিমা তার (সুমন) অন্ডকোষে স্বজোড়ে একটি লাথি দেয়। এতে প্রায় ৫ মিনিট ব্যাথায় কাতরানোর পর স্ত্রীর গলাচেপে ধরেন তিনি। এক পর্যায়ে রহিমা নিস্তেজ হয়ে পড়ে এবং মারা যায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মেহেন্দিগঞ্জ থানার এসআই তারিক হাসান রাসেল একই বছরের ২৭ অক্টোবর সুমনকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে এই মামলা অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে ১৮ জনের সকলের সাক্ষগ্রহনের শেষে স্ত্রী হত্যার দায় প্রমানিত হওয়ায় সুমন মুন্সিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর এবং তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।